কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে তাঁর বক্তব্য ঘিরে বিতর্ক হচ্ছে বিস্তর। এই আবহে দলও জানিয়ে দিয়েছে, তাঁর বক্তব্য একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। এই আবহে এবার চাপে পড়া মদন মিত্র যেন পালটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন। তিনি দাবি করলেন, তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি এমন কিছু বলেননি যা অনেককে কষ্ট দিয়েছে। এরই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, তাঁর সেই 'মেয়েটা যদি না যেত...' মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। এবং 'দলের অমঙ্গল কামনা করা একটি গোষ্ঠী' এই নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলেও দাবি করেন মদন মিত্র। এরই সঙ্গে নরমে-গরমে দলকে তাঁর বার্তা, 'দল আগামী কোনও পদক্ষেপের আগে দ্বিতীয়বার ভাববে।' (আরও পড়ুন: 'নারীবিদ্বেষ…', কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে কল্যাণ-মদনকে নিয়ে বিস্ফোরক মহুয়া)
আরও পড়ুন: ধৃত BJP নেতারা জামিন প্রত্যাখ্যান করবেন, লকআপ থেকে বেরিয়ে ঘোষণা সুকান্তর
নিজের ফেসবুক পোস্টে মদন মিত্র লেখেন, 'কসবা কাণ্ডে আমি দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এবং পুলিশ ইতিমধ্যেই অ্যাকশন নিচ্ছে। তবে আমি দোষীদের আড়াল করছি, এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করছি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি আমার মন্তব্যের পুরোপুরি ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী সেটাকে হাতিয়ার বানিয়ে অপব্যবহার করছে। তাদের মূল লক্ষ্য তৃণমূল কংগ্রেসের বদনাম করা। তারা তাই আমার মন্তব্যের ওপর ফোকাস করছে নিজেদের লক্ষ্য চরিতার্থ করার জন্য। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আমি এমন কোনও কাজ করিনি যা বহুলাংশে মানুষের অপছন্দের কারণ হয়েছে। আমি দলের বক্তব্য পড়েছি। দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে আমার অনুরোধ, আমাকে যেন ভুল বোঝা না হয়। প্রয়োজনে আমি আমার বক্তব্যের সঠিক ব্যাখ্য দেব বা যেকোনও তদন্তের মুখোমুখি হব। আমি আশা করব, দল আগামী কোনও পদক্ষেপের আগে দ্বিতীয়বার ভাববে।' (আরও পড়ুন: এক সেতুর দুই নিয়ম! MLA-র গাড়ি গেলেও থামল অ্যাম্বুলেন্স, মায়ের মৃতদেহ নিয়ে হাঁটলেন ছেলেরা)
উল্লেখ্য, তৃণমূলের কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র এর আগে বলেছিলেন, 'কসবাকাণ্ডে পড়ুয়াদের জন্য এক বড় বার্তা এসেছে। কলেজ যখন বন্ধ আছে, তখন যদি কোনও পরিচিতও আপনাকে ডাকে, তাহলে যাবেন না। ওই মেয়েটা যদি না যেত তাহলে এমন ঘটনা হত না। উনি যখন যাচ্ছিলেন সেই সময় যদি সঙ্গে করে আরও দুই বন্ধুকে নিয়ে যেতেন বা কাউকে জানাতেন এটা ঘটত না। যাঁরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাঁরা তো সুযোগেরই ব্যবহার করেছেন।'
মদন এবং এর আগে কল্যাণের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পরই তৃণমূল জানায়, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিরুদ্ধে দলের 'জিরো টলারেন্স' রয়েছে। এই আবহে দলেরই সাংসদ, বিধায়কের মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখে, 'এই মতামত কোনওভাবেই দলের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে না।' ওই পোস্টে অপরাধে জড়িতদের 'কঠোরতম শাস্তির' দাবিও জানানো হয়। সেই পোস্টে লেখা হয়, 'সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনা প্রসঙ্গে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ক মদন মিত্র যে মন্তব্য করেছেন, তা তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত। দল তাঁদের বক্তব্যের সঙ্গে কোনওভাবেই একমত নয় এবং এই মন্তব্যগুলিকে কড়াভাবে নিন্দা করছে। এই ধরনের বক্তব্য কোনওভাবেই দলের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে না। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট - মহিলাদের ওপর অপরাধের ক্ষেত্রে বরাবরই জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও করা হবে। যারা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।'