প্রায় দুই দশক আগের এক মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত আট পুলিশকর্মী-সহ ১১ জনকে বেকসুর খালাস করল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। বৃহস্পতিবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতের বিশেষ বিচারক রায় প্রমাণের অভাবে তাঁদের বেকসুর খালাস করেন। ফলে এই মামলায় ক্লিনচিট পেলেন তৎকালীন খড়্গপুর থানার ওসি অপূর্বকুমার নাগ এবং তাঁর অধীনে থাকা অন্যান্য অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীরা।
আরও পড়ুন: কেন একের পর এক মৃত্যু? কারণ খতিয়ে দেখতে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করল IIT খড়্গপুর
ঘটনার সূত্রপাত ২০০৪ সালে, মেদিনীপুরের খড়্গপুর হাইওয়েতে। অভিযোগ, এক যুবক সৌমেন মণ্ডল রাতে ছিনতাইয়ের শিকার হন। কিন্তু পরবর্তীতে সেই ছিনতাইয়ের মামলায় ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া সৌমেনকেই গ্রেফতার করে খড়্গপুর থানার পুলিশ। পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে। সেই সময় পুলিশের জিপ থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে গুরুতর জখম হন সৌমেন। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই উঠতে শুরু করে প্রশ্ন, এই মৃত্যু কি পুলিশের গাফিলতি না কি নির্যাতনের ফল?
পরিবারের পক্ষ থেকে ওঠে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু ও অত্যাচারের অভিযোগ। ঘটনায় দায়ের হয় এফআইআর। মামলায় নাম জড়ায় থানার তৎকালীন ওসি-সহ আরও ১০ জনের। তদন্তভার পরে চলে যায় সিবিআইয়ের হাতে, উচ্চ আদালতের নির্দেশে। বহু বছর ধরে চলে তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া। অবশেষে বৃহস্পতিবার দীর্ঘ শুনানি ও প্রমাণ যাচাইয়ের পর আদালত জানিয়ে দেয়, অভিযোগের পর্যাপ্ত ভিত্তি নেই, প্রমাণ ও সাক্ষ্য যথেষ্ট নয়। তাই সব অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করা হচ্ছে।
আদালতে অভিযুক্তদের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী অমিতাভ গঙ্গোপাধ্যায় ও গোপাল হালদার। তাঁদের বক্তব্য, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন ছিল এবং পুরো ঘটনা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। এই রায়ে বড়সড় ধাক্কা খেল সিবিআই। কারণ দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়ার পরও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আদালতে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে, এই রায় রাজ্য পুলিশের কাছে একপ্রকার স্বস্তি বলেই মনে করছেন অনেকেই।