প্রযুক্তি ব্যবহারের জেরে শহরে বেড়েছে ইলেকট্রনিক আবর্জনা। এটাকেই অনেকে ই–বর্জ্য বলে থাকেন। শহরের প্রায় প্রত্যেকটি ঘরে খোঁজ নিলে দেখা যাবে সেখানে আছে খারাপ হয়ে যাওয়া টিভি, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল, স্মার্ট ওয়াচ, ওয়াশিং মেশিন–সহ আরও অনেক কিছু। এই ই–বর্জ্য অনেকেই রাস্তায় ফেলে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। সাধারণ জঞ্জালের সঙ্গে রাস্তায় ই–বর্জ্য ফেলে দেওয়ার ঘটনায় সাফাই কর্মীরা চাপে পড়ে যাচ্ছেন। এগুলি সরানো একটা বিড়ম্বনার কাজ। আবার এসব থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে। এবার কল্লোলিনী কলকাতাকে এই সমস্যা থেকে দূর করতে এগিয়ে এসেছে কলকাতা পুরসভা। নষ্ট হয়ে যাওয়া ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম শহরবাসীর থেকে সরাসরি কিনবে কলকাতা পুরসভা।
এই কাজ করতে প্রত্যেক পাড়ায় শিবির খোলা হবে। আর সেখানে সরাসরি বাসিন্দারা এসে নিজের খারাপ হয়ে যাওয়া ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র দিতে পারবেন। আর ভাল দামই পাবেন। সম্প্রতি কয়েক মাস ধরে কলকাতা পুরসভার উচ্চপদস্থ অফিসাররা ই–বর্জ্য কেনার বিষয়ে নানা আলোচনা করেন। সেই আলোচনার পর এবার কেনার বিষয়ে সিলমোহর পড়েছে। রাজ্য তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা রেখে এই কাজ করা হবে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। নাগরিকদের থেকে খারাপ যন্ত্রাংশ কিনে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে তথ্যপ্রযুক্তি দফতরে।
আরও পড়ুন: নাগাড়ে বৃষ্টিতে তিস্তার জল বেড়ে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক, রংপো থেকে উদ্ধার তিন পর্যটক
কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ড। তার মধ্যে শুরুতে কয়েকটি ওয়ার্ডে এই উদ্যোগ পরীক্ষামূলকভাবে নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর নাগরিক সচেতনার জন্য প্রচারও করা হবে সব ওয়ার্ডে। এই বিষয়ে মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘ই–বর্জ্য সম্পর্কে প্রত্যেক ওয়ার্ডের মানুষের সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাই প্রথমে ১৫ দিন অন্তর সচেতনতা শিবির খোলা হবে।’ কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই প্রচার শুরু হওয়ার পাশাপাশি শহরের নাগরিকদের কাছ থেকে কেনা খারাপ ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির দাম মেটানো হবে ইউপিআই মাধ্যমে অথবা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কোনও নগদের ব্যবহার এখানে হবে না।
এই ই–বর্জ্য নিয়ে গিয়ে শহর পরিষ্কার রাখার চল আছে বিদেশে। সেখানে সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিনে খারাপ হয়ে যাওয়া সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়া হয়। তাতে নাগরিকদেরও সুবিধা হয় এবং শহরও পরিষ্কার থাকে। সঙ্গে দূষণ আটকানো যায়। এবার সেই ধাঁচেই কলকাতায় ই–বর্জ্য সংগ্রহ করার জন্য প্রকল্প নিয়ে আসা হচ্ছে। কলকাতা পুরসভা নাগরিকদের থেকে নির্দিষ্ট দামে খারাপ যন্ত্রপাতি কেনার পর সেগুলি তথ্যপ্রযুক্তি দফতরে পাঠানো হবে। তারপর নানা ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারীকে বিক্রি করা হবে। সেটা করবে তথ্যপ্রযুক্তি দফতর। ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি নতুন উৎপাদনের জন্য ১৫ শতাংশ ই–বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করে থাকে।