পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার (পিএমজিএসওয়াই) আওতায় তৈরি প্রতিটি রাস্তায় এবার বসাতে হবে কিউআর কোড। এমনই নির্দেশ পাঠিয়েছে কেন্দ্র সরকার। এর ফলে সাধারণ মানুষ মোবাইলে কোড স্ক্যান করে রাস্তা খারাপ হলে সরাসরি কেন্দ্রকে জানাতে পারবেন। তবে এই সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজ্য সরকারের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
রাজ্যের অভিযোগ, কেন্দ্র এখনও পিএমজিএসওয়াই প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গের প্রাপ্য ২,৪০০ কোটি টাকা দেয়নি। এমন অবস্থায় কিউআর কোড বসানোর নির্দেশকে দ্বিচারিতা বলেই দেখছে রাজ্য প্রশাসন। গত ২ জুন কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, সব রাস্তার জন্য নির্দিষ্ট পোর্টাল থেকে কিউআর কোড ডাউনলোড করে লাগাতে হবে। চিঠির সঙ্গে এসওপি-ও পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কেউ কোড স্ক্যান করলে কীভাবে ছবি তুলে কেন্দ্রীয় পোর্টালে আপলোড করবেন, তা বাংলায় বোঝাতে হবে। রাস্তা তৈরির পর পাঁচ বছর ধরে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব যাঁর, সেই ঠিকাদারের কাজ পর্যবেক্ষণের জন্যও এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে।
এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তিনি জানান, যদি কেন্দ্র টাকা দিয়ে এই কাজ করতে বলত, তাহলে সাধুবাদ জানানো যেত। এটা আসলে নির্বাচনের আগে রাজ্যকে অপদস্থ করার চেষ্টামাত্র। বাংলার মানুষ এত সহজে বিভ্রান্ত হবেন না। তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে পিএমজিএসওয়াই-৩ চালু করে কেন্দ্র। তাতে দেশের সব রাজ্য বরাদ্দ পেলেও পশ্চিমবঙ্গ প্রথম বরাদ্দ পায় তিন বছর পর। কেন্দ্র রাজ্যকে ৬,২৮৭ কিমি রাস্তার অনুমোদন দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত এসেছে ৪,২৩৬ কিমি রাস্তার ছাড়পত্র। এখনও বাকি ২,০৪৪ কিমি। রাজ্যের দাবি, এই প্রকল্পে তাদের প্রাপ্য ২,৫৮৮ কোটি টাকা হলেও হাতে এসেছে মাত্র ২২০ কোটি। বাকি ২,৩৬৮ কোটি কবে পাওয়া যাবে, তা নিয়ে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনও স্পষ্ট জবাব নেই।
একাধিক প্রকল্পে অর্থ বন্ধ রাখা, বিশেষ করে ১০০ দিনের কাজ ও সড়ক যোজনার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে অর্থ না দেওয়া নিয়ে আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। বিধানসভাতেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই অবস্থায় কেন্দ্রের নতুন নির্দেশকে রাজ্য প্রশাসনের একাংশ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করছে।