বেআইনিভাবে দলের তিন নেতাকে পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এই অভিযোগ তুলে এবার লালবাজারকে পদক্ষেপ নিতে চিঠি লিখলেন রাজ্যের স্বাধীন দায়ীত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহিলা কংগ্রেসের সভাপতি চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এদিন নগরপালের উদ্দেশ্যেে ওই চিঠিতে চন্দ্রিমা লেখেন, ‘ মমতা বন্দোপাধ্যাযের নের্তৃত্বে যখন দলের নেতারা এই অতিমারির মধ্যে মানুষকে কীভাবে বাঁচাবেন সেই চেষ্টা করছেন, তখন আশ্চর্যজনকভাবে দলের তিন নেতাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এমনকী, গ্রেফতার করার আগে কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানাও দেওয়া হয়নি তাঁদের। তিনি আরও লেখেন, ‘ যদিও সিবিআই স্বাধীন তদন্তকারি সংস্থা, তাঁরা স্বাধীনভাবেই কাজ করবেন বলে আশা রাখি, কিন্তু সিবিআই কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্যপালের নির্দেশে কীভাবে চলছে, সেটা বুঝতে পারছি না। তাছাড়া রাজ্যপালই বা কীভাবে কাউকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিতে পারেন, যখন আইনে এধরনের কোনও সংস্থান নেই।’এরপর রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে কটাক্ষ করে তিনি লেখেন, ‘ এটা খুবই লজ্জাজনক বিষয় যে, এ রাজ্যের রাজ্যপাল হয়েও তিনি বিজেপির মুখপাত্রের মতো আচরণ করছেন। শুধু তাই নয়, তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর অঙুলিহেলনেই এই সমস্ত কাজকর্ম চালাচ্ছেন। তিনি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট। তাঁর কোনও সাংবিধানিক এক্তিয়ার নেই যে, তিনি কাউকে গ্রেফতার করানোর জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেবেন। তাঁর এই পক্ষপাতিত্বের সব চেয়ে বড় উদাহরণ হল এই যে, তিনি সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায়কে গ্রেফতার করতে তৎপর হননি। কারণ, এঁরা দু’জনেই বিজেপি নেতা। তাঁদের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা চালাচ্ছে সিবিআই।’ চন্দ্রিমা আরও লেখেন, ‘ এই সব কিছুর পিছনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ষড়যন্ত্র রয়েছে। তারাই রাজ্যপালকে দিয়ে এই সমস্ত পরিচালনা করাচ্ছেন। এর আগেও তাঁরা আমাদের দলের নেতাদের ভাঙানোর চেষ্টা করেছেন, তার পর সাংবিধানিক ভাবে ভোটে জিততে না পেরে, এখন এই পন্থা অবলম্বন করেছেন। এমনকী, মন্ত্রী ও বিধায়ককে গ্রেফতার করার আগে বিধানসভার স্পীকারের অনুমতিও নেওয়া হয়নি।’এরপর সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে কলকাতা পুলিশকে অনুরোধও করেন চন্দ্রিমা।উল্লেখ্য, সোমবার সকালে নারদ কাণ্ডে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ছাড়াও বিধায়ক মদন মিত্র ও শোভন চট্টপাধ্যায়কে প্রথমে আটক করে নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এদিনই ব্যাঙ্কশাল আদালতের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে বিচারক অনুপম মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে মোট পাঁচ জন প্রাক্তন আইপিএস এসএমএস মির্জা, শোভন চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অনলাইনে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। যদিও এই মামলায় মন্ত্রী-বিধায়কদের শারীরিক উপস্থিতির বদলে ভার্চুয়াল শুনানির অনুমতি দেয় আদালত।