দিঘার জগন্নাথ মন্দির যে সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নেবে তা অনেকেই ভাবতে পারেননি। কিন্তু উদ্বোধনের আগে থেকেই সেটাই ঘটেছে। বুধবার অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্য লগ্নে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন হয়। তারপরই উপচে পড়েছিল ভিড়। আর আজ, শনিবার বারবেলায় ইসকন কলকাতার ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা মুখপাত্র দিঘার মন্দিরে দাঁড়িয়েই দাবি করলেন, এই সাড়ে তিন দিনে ১০ লক্ষের বেশি পুণ্যার্থী এসে গিয়েছেন মন্দিরে। এটা যে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠবে তা আগেই জানিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেটাই যেন সরাসরি দেখা গেল দিঘায়।
দিঘায় এতদিন সমুদ্রসৈকতেই সময় কাটানোয় সীমাবদ্ধ থাকত পর্যটকদের ভ্রমণ। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। সমুদ্রের সঙ্গে জগন্নাথধাম মিলবে। সঙ্গে বাংলার মিষ্টি। সুতরাং এখন আর আটকে থাকবে না জীবন সমুদ্রসৈকতে। আজ আনন্দবাজার অনলাইকে রাধারমণ দাস বলেন, ‘অক্ষয়তৃতীয়ার দিন জগন্নাথ মন্দিরে এসেছিলেন দু’লক্ষের কিছু বেশি মানুষ। তারপর বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় পাঁচ লক্ষের কিছু বেশি। আর শুক্রবারের পরিস্থিতি বলছে শনিবার মোট সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে।’ সুতরাং রবিবার ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর নির্যাতন চলছে বিজেপি শাসিত রাজ্যে, শাহকে পত্রবোমা সামিরুলের
দিঘার জগন্নাথ মন্দির রোজ সকাল ৬টায় খোলে। দুপুর ১টা পর্যন্ত পুণ্যার্থীরা মন্দিরে আসেন। ১টার পর দু’ঘণ্টা বন্ধ থাকে মন্দির। আবার দুপুর ৩টে নাগাদ খোলা হয়। আর তা থাকে রাত ৯টা পর্যন্ত। পুজো দেওয়া থেকে শুরু করে দেদার সেলফি নেওয়া সবই চলছে এখানে। অনেকে আবার পুরীর সঙ্গে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের মিল–অমিল খুঁজে বেড়ান। রাধারমণ দাস জানান, পুণ্যার্থীরা পুজোর ডালা নিয়ে মন্দিরে আসেন। পূজারি পুজো করার পর সেই ডালা পুণ্যার্থীদের হাতে তুলে দেন। রোজ সন্ধ্যায় জগন্নাথদেবের উদ্দেশে ৫৬ ভোগ অর্পণ করা হয়। সেই ভোগ আবার বিতরণ করা হয়। প্রণামীর জন্য নির্দিষ্ট বাক্স আছে।
দিঘার জগন্নাথ মন্দির সামলাচ্ছে রাজ্য পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়াররা। ইসকনের স্বেচ্ছাসেবকরাও ভিড় সামলাতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন এবং প্রথম আরতি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মন্দির উদ্বোধনের পরদিনই পুরীর পুরোহিতরা ফিরে গিয়েছে। এখন সবটাই সামলাচ্ছে ইসকন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন যে, উদ্বোধনের পরই মন্দিরের দায়িত্ব দেওয়া হবে ইসকনের হাতে। আর জগন্নাথ মন্দিরের দেখভাল করবে একটি ট্রাস্ট। এই মন্দিরের প্রসাদ বাংলার প্রত্যেক নাগরিকের বাড়ি পাঠানো হবে। সঙ্গে থাকবে ছবিও। সেই কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।