IPL 2025-র ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে শুরুটা করেছিলেন বিরাট কোহলি, জ্যাকব বেথেল, রোমারিও শেপার্ডরা। আর শেষটা করবে বলে ভেলেছিলেন চেন্নাই সুপার কিংসের তরুণ ক্রিকেটার আয়ুশ মাত্রে। তাঁর ব্যাটিংয়ের সুবাদেই আরসিবির বিরুদ্ধে চেন্নাই সুপার কিংস চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে গিয়ে জ্বলে ওঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় জলে গেল আয়ুষের লড়াই।
টস জিতে বোলিং CSK-র
টস জিতে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল শুরুতে ফিল্ডিং নিয়েছিল। আগেরবার চিন্নাস্বামীতে এসে শেষ ওভারে ম্যাচ হেরে ছিটকে গেছিল ধোনির CSK। এবার তাঁরা ছোট মাঠে রান চেজ করে নেবেন, এই আশায় দল সাজিয়েছিলেন। আর প্রথমে বোলিং নেন। ব্যাট করতে নেমে বিরাট কোহলি এবং জ্যাকব বেথেল দুরন্ত ছন্দে শুরু করেন। দুই ব্যাটারের অসাধারণ হাফ সেঞ্চুরির সুবাদে ১০ ওভারেই ১০০র কাছে চলে যায় আরসিবি। ৯.৫ ওভারের মাথায় ব্যক্তিগত ৫৫ রানের মাথায় বেথেল যখন আউট হলেন তখন আরসিবির স্কোর ৯৭।
অনবদ্য হাফ সেঞ্চুরি বিরাট-শেপার্ডের
এর ২ ওভার পরই আউট হলেন বিরাট কোহলি, ৩৩ বলে তিনি করলেন ৬২ রান। মারলেন ৫টা ছয়। এদিনের বিরাটকে দেখে অনেকেই চিন্তে পারছিলেন না, শুরু থেকেই তিনি ছিলেন মারমুখী। কিন্তু আবারও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় চাপে পড়ে যায় আরসিবি। পাথিরানা ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন। নূর আহমেদও এদিন দুর্দান্ত বোলিং করলেন ২৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে। একটা সময় মনে হচ্ছিল আরসিবিকে ১৮০র মধ্যেই আটকে দেবে সিএসকে। কিন্তু এরপরই ক্যারিবিয়ান মাশেল পাওয়ার দেখান রোমারিও শেপার্ড। মাত্র ১৪ বলে ৬টা ছয় আর চারটে চার মেরে তিনি ৫৩ রান করে আরসিবির স্কোর ২০ ওভারে ২১৩ রানে পৌঁছে দেন।
দুরন্ত ব্যাটিং আয়ুষের
ব্যাট হাতে এই রান তাড়া করতে নেমে সিএসকের ১৭ বছর বয়সী ওপেনার আয়ুষ মাত্রে দুর্দান্ত ৯৪ রান করেন। তাতেও ম্যাচ জিততে পারল না মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। ৪৮ বলের মাথায় এনগিডির বলে তিনি যখন আউট হলেন ততক্ষণে সিএসকে জয়ের একদম কাছে চলে এসেছে। নিজের ইনিংসে মারলেন ৫টি ছয় এবং ৯টি চার। কিন্তু তাঁদের মিডল অর্ডার ঠিক কতটা খারাপ, সেটাই বোঝা গেল আয়ুষের আউটের পর।
ম্যাচে দুরন্ত স্পেল লুঙ্গি এনগিডির
রবীন্দ্র জাদেজাকেও এদিন ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোট করা হয়েছিল, তিনিও আয়ুষের সঙ্গে ১১৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ফেলেন। নিজেও অর্ধশতরান করে দলকে টেনে নিয়ে যান জয়ের সামনে। এদিন আয়ুষের ব্যাটিং দেখে সিএসকের ম্যানেজমেন্ট হয়ত হাত কামড়াচ্ছিলেন, কারণ তাঁকে যদি আরও আগে দলে নেওয়া যেত তাহলে হয়ত চেন্নাই সুপার কিংসকে এত তাড়াতাড়ি আইপিএল থেকে ছিটকে যেতে হত না। স্যাম কারান নেমে ৫ বলে ৫ রান করে এনগিডির বলেই আউট হন। এদিকে আয়ুষ আউট হওয়ার পর ব্রেভিস নামলেও প্রোটিয়া তারকাকে প্রথম বলেই LBW আউট করে সাজঘরে পাঠান স্বদেশী পেসার এনগিডি।
১৬তম ওভারে দুটি ক্যাচ মিস RCB-র
১৬তম ওভারে যশ দয়ালের বোলিংয়ে জাদেজার ক্যাচ মিস করেন রজত পতিদার। এরপর সেট হয়ে যাওয়া আয়ুষেরও ক্যাচ মিস করেছিলেন এনজিডি, কিন্তু পরের ওভারেই তিনি সুদে আসলে বিষয়টা পুশিয়ে দেন। তবে জাদেজার ক্যাচ মিসটা খুবই কঠিন হয়ে গেল আরসিবির কাছে। কারণ ১৭তম ওভারের পঞ্চম বলে এনগিডির ওভারে ছয় মারেন জাড্ডু।
দুর্দান্ত বোলিং যশ দয়ালের
এরপর শেষ ওভারে মহেন্দ্র সিং ধোনি আউট হয়ে যান। তিনি ৮ বলে ১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর ম্যাচ হচ্ছিল আরসিবি বনাম জাদেজা। যেভাবে অবিশ্বাস্য ঢংয়ে ২০২৩ আইপিএল ফাইনালে গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে চেন্নাইকে জিতিয়ে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন জাড্ডু, এদিনও তেমন ইনিংসই দরকার ছিল তাঁর ব্যাট থেকে। এরই মধ্যে যশ দয়াল নো বলে ছয় রান খান। শিবম দুবে ছয় মেরে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। তবে তাও ম্যাচ জিততে পারল না সিএসকে।
শেষ ২ বলে ৫ রানও তুলতে পারল না চেন্নাই। শেষ পর্যন্ত ২ রান দূরে থেমে গেল তাঁদের ইনিংস। শেষ দিকে পরপর তিনটি বলই ইয়র্কার করার চেষ্টা করেন যশ, তাতে দুটি ফুল টসও হয়। কিন্তু শিবম দুবে বা জাদেজা বড় শট মারতে আর পারলেন না। জাদেজা ৪৫ বলে ৭৭ রানে অপরাজিত থাকলেন। এদিকে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়া ওভারের পর লুঙ্গি এনগিডি নিজের স্পেল শেষ করলেন চার ওভারে ৩০ রানে তিন উইকেট দিয়ে। যশ দয়াল এই নিয়ে টানা দুবার চিন্নাস্বামীতে শেষ ওভারে আরসিবিকে সিএসকের বিরুদ্ধে জেতালেন।