বাঘের আক্রমণে বেঘোরে প্রাণ হারাতে হয়েছে অনেক মৎসজীবীকে। তবে এবার কুমিরের সঙ্গে লড়ে প্রাণে বাঁচলেন এক মৎসজীবী। কুমিরের মুখ থেকে শুধু বেঁচেই ফিরলেন না, সেই বিশাল পাঁচ ফুটের কুমিরটিকে পাকড়াও করে বনদফতরের হাতেও তুলে দিলেন তিনি। মাছ ধরতে গিয়ে কুমিরের সঙ্গে লড়ে জীবন ফিরে পেয়েছেন কাকদ্বীপের ফটিকপুর গ্রামের সেকেন্দার আলি নামের ওই মৎসজীবী। বুধবার রাতে কুমিরটিকে নামখানা বনদফতরের হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। কুমিরটিকে দেখতে ওই এলাকায় ভিড় করেন গ্রামবাসীরা। ওই মৎসজীবী জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় কাকদ্বীপ বরপাড়ার কাছে তিনপুরী নদীর খাড়িতে জাল নিয়ে মাছ ধরতে যান তিনি। তাঁর সঙ্গে প্রতিবেশী কয়েকজন মৎসজীবীও গিয়েছিলেন। এর পর নদীর জলে নেমে মাছ ধরতে শুরু করেন তাঁরা। মাছ ধরতে ধরতেই সঙ্গীদের পেছনে ফেলে কিছুটা এগিয়ে যান সেকেন্দার। এরই মধ্যে আচমকা ঝোঁপের মধ্যে থেকে একটি পূর্ণবয়স্ক কুমির বেরিয়ে এসে আক্রমণ করে তাঁকে। সেই সময় সেখানে একাই ছিলেন ওই মৎসজীবী। তাঁর ওপরেই ঝাঁপিয়ে পড়ে কুমিরটি। প্রত্যেক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভয় না পেয়ে পাল্টা ওই মৎসজীবী কুমিরের মুখ চেপে ধরেন। তারপর কুমির আর ওই ব্যক্তির মধ্যে ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়ে যায়। তবে সেই সময় মাছের জাল সঙ্গে থাকায়, সেটা দিয়ে কুমিরটিকে প্যাঁচাতে শুরু করেন ওই মৎসজীবী। ফলে, কুমিরটি ঝাঁপটা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তার মুখ, দাঁত, পা সব জালে জড়িয়ে যায়। বিকট আওয়াজ শুনে ততক্ষণে তাঁর ২-৩ জন সঙ্গী ঘটনাস্থলে চলে আসেন। তাঁরাই কুমিরটিকে চেপে ধরে জাল দিয়ে জড়িয়ে তাকে নিয়ে ফটিকপুর গ্রামে ফিরে আসেন। তার পর বনদফতর ও কাকদীপ থানায় খবর দেওয়া হয়। রাত ১০ টা নাগাদ ফটিকপুর গ্রামে উপস্থিত হন বনদফতরের আধিকারিকরা। তাঁরা ওই কুমিরটিকে উদ্ধার করে নামখানা বনদফতরে নিয়ে যান। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কুমিরটিকে ভাগবতপুর কুমির প্রকল্পে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে।বনদফতর জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টির কারণে চারিদিকে জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। তাছাড়া নদীর জলের পাক বেশি। তাই কুমির সেখানে থাকতে পারছে না। তাই তারা উঁচু জঙ্গলের দিকে উঠে আসছে।