জীবনতলা থানার অন্তর্গত ঘুটিয়ারি শরিফ ফাঁড়ির পুলিশ তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ৭৮৮ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করল। এই ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ শুক্রবার দুপুরে ঘুটিয়ারি শরিফের দক্ষিণ মাখালতলা এলাকায় গোলবানু বিবি নামে এক গৃহবধূর বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় ৭৮৮ গ্রাম হেরোইন। বেশ কিছু সোনা ও রুপার গয়না, ব্যাঙ্কের পাস বই–সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই এই গোলবানু এলাকায় হেরোইনের ব্যবসা চালাচ্ছিল ওই গৃহবধূ। সংসার এবং গৃহকর্মের পিছনেই হেরোইনের কারবার চালাত সে।
এদিকে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই এলাকায় অতর্কিতে হানা দেয় পুলিশ। গ্রামবাসীরা জানতেন তিনি গৃহবধূ। সংসার সামলান। সকলের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রাখত ওই বধূ। কিন্তু আজ, শনিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিনে অন্য একটি পরিচয় জানলেন গ্রামবাসীরা। ওই বধূর বিরুদ্ধেই হেরোইন পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। আর তাই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার অন্তর্গত ঘুটিয়ারি শরিফে। ধৃত ওই বধূর কাছ থেকে প্রায় ৮০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দম্পতির গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার আসানসোলে, ঋণের চাপেই কি আত্মহত্যা? তদন্তে পুলিশ
অন্যদিকে পুলিশ বেশ কিছু সোনা–রুপোর গয়না উদ্ধার করেছে ওই গোলবানু বিবির বাড়ি থেকে। ওই গয়নাগুলির মালিক কে? উঠছে প্রশ্ন। কারণ ওই সব গয়না কেনা একজন সাধারণ গ্রামবাসী বধূর পক্ষে সম্ভব নয়। আর কোনও নথি দেখাতে পারেননি গৃহবধূ গোলবানু বিবি বলে দাবি পুলিশের। এই বধূর কাছে প্রায়ই কিছু অপরিচিত লোক আসত বলে প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন। ওই অপরিচিত লোকজনই ছিল আসল পাচারকারী। আর এই বধূই ছিল মাদক পাচারের কিংপিন। বাড়িতে থেকেই গোটা মাদক নেটওয়ার্ক চালাত গোলবানু বিবি। এটাই পুলিশ গোপন সূত্রে জানতে পেরে যাওয়ায় হানা দেয়।
এছাড়া ঘুটিয়ারি শরিফ ফাঁড়ির ওসি সুকুমার রুইদাস নিজে অন্যান্য পুলিশকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি অভিযানে যান। সেখানে গিয়ে গোলবানুর ঘরে তল্লাশি করতেই আসে সাফল্য। ওই বধূকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসার সময় যথেষ্ট বেগ পেতে হয় পুলিশকে। পুলিশের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকায় ওই বেআইনি মাদক কারবার চালাচ্ছিল সে। ধৃতকে আজ, শনিবার আলিপুর আদালতে তোলা হচ্ছে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে ঘুটিয়ারি শরিফ ফাঁড়ির পুলিশ। কিন্তু এই চক্রের চাঁই কে? গোলবানু বিবিকে জেরা করা জানতে চায় পুলিশ। তাই নিজেদের রিমান্ডে নিতে চাইছে।