ভারত–পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার আবহে উত্তরবঙ্গের বাগডোগরা সেনাবাহিনীর ছাউনির কাছে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেল এক বাংলাদেশি নাগরিককে। তৎক্ষণাৎ তাকে আটক করল ভারতীয় সেনা। তারপর চলে লাগাতার জেরা। ওই জেরাতেই ধৃত ব্যক্তি নিজেকে বাংলাদেশের প্রাক্তন গোয়েন্দা অফিসার বলে দাবি করেছেন। যার ফলে ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে। পহেলগাঁও হামলার জবাবে ‘অপারেশন সিঁদুর’ দেখেছে পাকিস্তান। একদম নির্দিষ্ট লক্ষ্যে হানা দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিগুলি। একের পর এক জঙ্গি নিহত হয়েছে। যার সংখ্যা বহু। তারপর ভারতের উপর পাল্টা আক্রমণ করতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে গিয়েছে পাক সেনারা। এই আবহে এমন ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগের।
এদিকে সূত্রের খবর, এমএম তরাই এলাকার বাসিন্দারা প্রথমে ওই ব্যক্তিকে দেখতে পান। তারপর ওই ব্যক্তির গতিবিধি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং সেনাবাহিনীকে বিষয়টি জানান। তারপর ব্যাঙডুবি সেনা ছাউনির ৫ এফওডি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ব্যক্তিকে আটক করে। পরে তাকে বাগডোগরা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আজ, শনিবার পাকিস্তানের তিনটি বিমান ঘাঁটি উড়িয়ে দিয়েছে ভারত বলে সূত্রের খবর। সেখানে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক ভাল। বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে পাকিস্তানের জঙ্গি ঢুকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তার মধ্যেই এমন ঘটনা কপালে ভাঁজ ফেলেছে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় সেনা জওয়ানের বাড়িতে পড়ল হুমকি পোস্টার, নদিয়ায় আতঙ্কে গোটা পরিবার
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত ব্যক্তির নাম আশরাফুল আলম। মাঝবয়সি এই ব্যক্তি কেমন করে বাংলাদেশ থেকে এখানে এলেন? প্রাক্তন গোয়েন্দার এমনভাবে আসার কারণ কী? কে তাঁকে এখানে পাঠিয়েছে? এইসব প্রশ্নের উত্তর জানতে জেরা করা হচ্ছে। প্রথমে আটক করা হলেও পরে সন্দেহ বাড়তেই গ্রেফতার করা হয়েছে আশরাফুলকে। এই ব্যক্তি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বাদরগাছ এলাকার বাসিন্দা বলে পুলিশকে জানান। আশরাফুল আলমের দাবি, তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রাক্তন গোয়েন্দা দফতরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, প্রায় ৬ মাস আগে রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে নদী পেরিয়ে চোরাপথে ভারতে প্রবেশ করেন আশরাফুল আলম। প্রাক্তন গোয়েন্দা হলে তো বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা নিয়েই ভারতে আসতে পারতেন! সেখানে অবৈধ পথে কেন এলেন? তার কাছ থেকে এখন কোনও বৈধ পরিচয়পত্র নেই। এখন তাঁকে আজ শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে পেশ করে রিমান্ডে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ। গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে গোয়েন্দা বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।