কদিন আগেই হিংসার আগুনে জ্বলেছে মুর্শিদাবাদ জেলার ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ। সেই রেশ এখনও সম্পূর্ণ কাটেনি। আজও মানুষ সেই আতঙ্কের কথা ভোলেনি। যখন প্রাণ ভয়ে ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। তাই ঘরছাড়াদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এই আবহে এবার কোচিং সেন্টার লক্ষ্য করে বোমা মারার অভিযোগ উঠল। তাতে আবার আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হল। কারণ আক্রান্ত হয়েছে শৈশব। একজন কিশোর একজন কিশোরী আক্রান্ত হয়েছে।
এই বোমাবাজিতে আক্রান্ত শৈশবের ঘটনা সামনে আসতেই মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এলাকায় আতঙ্ক দানা বেঁধেছে। আবার কি ঘটবে হিংসা? আজ বুধবার সকালে তিনপাকুড়িয়া দেবীদাসপুর গ্রামে এক কোচিং সেন্টারের সামনে বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ। তীব্র আওয়াজে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। আর সেই বোমার স্প্রিংটার এসে লাগে ওই কিশোর এবং কিশোরী পড়ুয়াদের উপর। তাতে তারা ঘাবড়ে যায় এবং চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কোচিং সেন্টারে বাচ্চারা পড়তে এসেছিল। রোজ যেমন আসে। কয়েকজন গিয়ে কোচিং সেন্টারের দরজার সামনে বোমা ছোড়ে। তখন কোচিং সেন্টার থাকা দুই কিশোর কিশোরী আক্রান্ত হয়। বোমার স্প্রিংটার ছিটকে গায়ে লাগে তাদের।
আরও পড়ুন: প্রাণপ্রতিষ্ঠার কাজ সম্পন্ন হয়েছে, জগন্নাথধামের ধ্বজা উত্তোলকদের ১০ লক্ষ টাকার বিমা মমতার
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দুই শিশুকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। তাদের আঘাত খুব গুরুতর নয়। তবে ওই আতঙ্ক থেকে এখনও তারা বের হতে পারেনি। এই বোমার আঘাতে প্রাণও যেতে পারত। শুধু কোচিং সেন্টারের ভিতরে থাকায় বেঁচে যায় তারা। কোচিং সেন্টার এক শিক্ষক পুলিশকে জানান, কোচিংয়ের পিছনে একটি বাড়িতে অশান্তি চলছিল। ভাঙচুরও চলে। তারপরে হঠাৎ করে একদল দুষ্কৃতী এসে কোচিং সেন্টার বোমা ছোড়ে। কেন এমন করল? কারা করল? সেটা বোঝা যায়নি। তদন্তে নেমেছে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ।
কিছুদিন আগেই মারাত্মক আকার নিয়েছিল এই সামশেরগঞ্জ। উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল এই মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ। পর পর বাড়িতে চলে বেপরোয়া ভাঙচুর, লুঠপাঠ। ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় নেমে প্রতিবাদে যে হিংসার আন্দোলন হয়েছিল তাতে তেতে ওঠে রাজ্য–রাজনীতি। নামাতে হয় আধা সেনা এবং পুলিশের বিশাল বাহিনী। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার নিজে হাজির থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ, ধূলিয়ান, সুতি–সহ নানা এলাকার মানুষ আতঙ্কে সিঁটিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে পরিস্থিতি ছিল থমথমে। এখন দোকানপাঠ, বাজারহাট, স্কুল–কলেজ এবং কোচিং সেন্টার খুলেছে। তারই মধ্যে এই ঘটনা ঘটল। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।