স্নাতক স্তরের ষষ্ঠ সেমেস্টারে ভর্তি নিয়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল কলেজ। এই অভিযোগ ঘিরে বুধবার অশান্ত হয়ে উঠল কলেজ চত্বর। প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামে এসএফআই, পাল্টা রাস্তায় নামে তৃণমূল ছাত্র পরিষদও। উত্তেজনার মধ্যেই অধ্যক্ষের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয় অবদলনকারীরা। এরফলে প্রায় থমকে যায় কলেজের প্রশাসনিক কার্যকলাপ। (আরও পড়ুন: বড় বদল কেন্দ্রের, রেশন কার্ড হোল্ডাররা এই কাজ না করলে নিষ্ক্রিয় হবে কার্ড)
আরও পড়ুন: মেডিক্যাল কলেজে অনিয়ম হলেই নেওয়া হবে কঠোর পদক্ষেপ, স্পষ্ট বার্তা NMC’র
এসএফআই-এর অভিযোগ, ষষ্ঠ সেমেস্টারে ভর্তির নাম করে অন্তত ১৮৬ জন ছাত্রছাত্রীর কাছ থেকে বেআইনিভাবে আদায় করা হয়েছে লক্ষাধিক টাকা। ফি বাবদ নেওয়া হয়েছে দুই থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত, যা সরকারি নির্ধারিত ফি-র চেয়ে অনেক বেশি। তাদের দাবি, কোনও রসিদ ছাড়াই এই টাকা আদায় করা হয়েছে। নকল রসিদও ব্যবহার করা হয়েছে বলে আশঙ্কা। বিক্ষোভরত ছাত্রদের অভিযোগ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিয়ন রুমেই চালানো হয়েছে এই টাকা আদায়ের প্রক্রিয়া। তৃণমূলের প্রতি সহানুভূতিশীল পড়ুয়াদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে তুলনামূলকভাবে কম টাকা, বাকি পড়ুয়াদের কাছ থেকে বেশি। অনেক পড়ুয়া এখনও নিশ্চিত নন, আদৌ তাঁরা ভর্তির তালিকায় আছেন কিনা। (আরও পড়ুন: ভিনরাজ্যে 'বাংলাদেশি' ধরা নিয়ে আপত্তি তৃণমূলের, এরাজ্যেই গ্রেফতার অবৈধবাসী)
এসএফআই অভিযোগ করেছে, এই আর্থিক দুর্নীতির জেরে বহু পড়ুয়া এখনও পঞ্চম সেমেস্টারের মার্কশিট পাননি। ষষ্ঠ সেমেস্টারে নাম না থাকলে পূর্ববর্তী সেমেস্টারের মার্কশিট দেওয়া হয় না। এই নিয়মের দোহাই দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের আটকে রাখা হচ্ছে। এমনকী, যাঁরা টাকা দিয়েছেন বলেও দাবি করছেন, তাঁদের নাম কলেজ রেজিস্টারেও দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে কলেজ চত্বর। এসএফআই সদস্যরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ফ্লেক্স ছিঁড়ে ফেলে। আর তারই জেরে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় অধ্যক্ষের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। যদিও পরে তালা খোলা হয়।
এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক রণিত বেরা জানিয়েছেন, এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁদের কাছে অডিও প্রমাণও রয়েছে। তাতে এক তৃণমূল ছাত্রনেতা ও এক অভিভাবকের কথোপকথন ধরা পড়েছে। যদিও এর সত্যতা এখনও নিশ্চিত নয়। (আরও পড়ুন: উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের 'রূপ বদল', ভারী বৃষ্টিতে ভাসবে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গ)
এই বিক্ষোভের মাঝেই সামনে এসেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। শনিবার রাতে ঘাটালের একটি গেস্ট হাউসে কলেজের অধ্যক্ষ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্ব ও জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতির মধ্যে গোপন বৈঠক। যদিও অজিত মাইতি দাবি করেছেন, সেটি ছিল কলেজের অভ্যন্তরীণ আলোচনা ও ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি বৈঠক। এসএফআই এই দাবিকে সরাসরি অস্বীকার করে জানিয়েছে, এই গোপন আলোচনাই প্রমাণ করে দুর্নীতি চাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পাল্টা অভিযোগ, এসএফআই অযথা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, মিথ্যে অভিযোগ ছড়াচ্ছে। তবে অধ্যক্ষ মন্টুকুমার দাস গোটা ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।