কালীগঞ্জে দশ বছরের তামন্না খাতুনের মৃত্যুর ঘটনায় এবার ধরা পড়ল আরও দুই ব্যক্তি। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও বুথ সভাপতি গাওয়াল শেখ এবং তাঁর ছেলে বিমল শেখ। নিহত তমন্নার মায়ের অভিযোগ অনুযায়ী, গাওয়ালই ছিল পুরো হামলার মূল পরিকল্পনাকারী। তাঁর নির্দেশেই ছোড়া হয়েছিল বোমা। শুক্রবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বর্ধমানের কাটোয়া থেকে এই দুইজনকে গ্রেফতার করে। এই নিয়ে মামলায় মোট ধৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯ জনে। (আরও পড়ুন: কোন সময়সীমার বকেয়াকে মান্যতা রাজ্যের? স্পষ্ট ডিএ মামলার হলফনামায়)
আরও পড়ুন: তামান্না খুনে গ্রেফতার কালু শেখ-সহ ৫ জন, তারপরই কালীগঞ্জে যাচ্ছেন BJP-র সুকান্ত
তমন্নার পরিবার যে এফআইআর দায়ের করেছিল, সেখানে গাওয়াল ও তাঁর ছেলের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে জানিয়েছেন, গাওয়াল শেখ হল এই হামলার মূল অভিযুক্ত। তাঁকে এবং আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, বাকি অভিযুক্তদের খুব তাড়াতাড়ি ধরা হবে। (আরও পড়ুন: আরজি করের পরে কসবা! কীভাবে এত বড় কাণ্ড কলেজের ভিতরে? পদক্ষেপ সরকারের)
আরও পড়ুন: কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে গ্রেফতার আরও এক, পুলিশের জালে এবার কে?
উল্লেখ্য, ১৯ জুন কালীগঞ্জ বিধানসভায় উপনির্বাচন হয়েছিল। ফলপ্রকাশের দিন ২৩ জুন শাসকদলের বিজয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় এলাকা জুড়ে বিজয় মিছিল শুরু হয়। অভিযোগ, সেই মিছিল থেকেই সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয় মোলান্দিতে। তাতে আহত হয়ে মৃত্যু হয় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তমন্না খাতুনের। তাঁর পরিবার দীর্ঘদিন ধরেই সিপিএমের সমর্থক বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। গাওয়ালের গ্রেফতারির খবরে তমন্নার মা বলেন, এই লোকটাই বোমা মারার নির্দেশ দেয়। ওই ঘটনার প্রধান মাথা। তবে ওর উপরে যারা রয়েছে, তাদেরও ধরতে হবে। গাওয়ালকে জেরা করলে সব জানা যাবে। (আরও পড়ুন: কসবা কলেজে গণধর্ষণকাণ্ডে রয়েছে সাক্ষী, দাবি নির্যাতিতার, কে সেই ব্যক্তি?)
আরও পড়ুন: গলায় কামড়, যৌনাঙ্গে ক্ষত, সামনে এল কসবা কাণ্ডে নির্যাতিতার মেডিক্যাল রিপোর্ট
এই ঘটনার পর তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যে দেখা গেছে আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রবণতা। দলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, অপরাধীর কোনও দল হয় না। যারা এমন বর্বর কাণ্ড করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির দাবি জানানো হচ্ছে। বিজেপি অবশ্য এই গ্রেফতারিকে ‘প্রহসন’ বলে কটাক্ষ করেছে। দলের এক জেলা নেতার বক্তব্য, চুনোপুঁটিদের ধরা হচ্ছে, আর বড় মাথারা থেকে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। তৃণমূল যাদের দিয়ে এলাকাজুড়ে দাপট চালিয়েছে, এখন তারাই বলির পাঁঠা। (আরও পড়ুন: কসবা কলেজে গণধর্ষণকাণ্ডে সামনে শিউরে ওঠার মতো বর্ণনা, ৩ঘণ্টা ২০ মিনিটে কী কী ঘটে)
এদিকে, সিপিএম পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সরাসরি অভিযোগ তুলেছে। তাদের বক্তব্য, পুলিশ সব কিছু আগেই জানত। তারপরেও দুষ্কৃতীদের গা ঢাকা দেওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এখন মানুষের ক্ষোভ দেখে নাটক করছে। এর প্রতিবাদসভা করা হবে।