পাঁশকুড়ায় হাসপাতালে ধর্ষণের ঘটনায় জোরদার রাজনৈতিক তরজা। জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার গতকাল পাঁশকুড়ায় যান। তবে তাঁর সঙ্গে এসপি বা এসডিপিও দেখা করেনি। এই আবহে তিনি পালটা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারের দিল্লিতে তলব করা হবে। অর্চনা বলেন, 'আজ আমার পুলিশ সুপারের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু উনি আগাম জানিয়ে দেন যে তিনি আসতে পারবে না। তাই তাঁর পরিবর্তে এসডিপিও আসবেন। আমি ক্ষণিক আগেই ওনাকে সাক্ষাতের জন্য ফোন করি। কিন্তু উনি আমাকে জানান, কোথাও একটা বন্যা পরিস্থিতির কারণে তাঁকে তড়িঘড়ি সেই দিকেই রওনা দিতে হয়েছে।'জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার বলেন, 'দিল্লি থেকে জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি এসেছে, কিন্তু এখানে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য কোনও পুলিশের প্রতিনিধিই আসেননি। আমার কাছে মোট ৪১ জন অভিযোগ জানিয়েছেন। তার মধ্যে দু’জন ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়েছেন। ওনারা অবশ্য জেলাশাসকের কাছেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এত বড় একটা ঘটনা। কিন্তু পুলিশের তরফে কমিশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই ঘটনায় সমাধান সূত্র টানার জন্য কোনও পদক্ষেপই দেখা গেল না। এটা ইচ্ছাকৃত না অনিচ্ছাকৃত তা আমি সত্যিই জানি না। তবে একটা জিনিস খুব স্পষ্ট, এ রাজ্যে মেয়েদের বিচার পেতে দেরি হবেই। পুলিশ অপারগ। কমিশন এখানে থামবে না। এর তদন্ত হবে। বিচার হবে। আর উনি (পুলিশ সুপার) তো আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এলেন না। এবার তিনি দিল্লি গিয়ে দেখা করবেন।'উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো এই ধর্ষণের অভিযোগ সামনে আসে। তমলুক থানার অন্তর্গত এক তরুণী বেসরকারি সংস্থার অধীনে ওয়ার্ড গার্ল হিসেবে কাজ করতেন সেই হাসপাতালে। তাঁর অভিযোগ, ওই কোম্পানির ফেসিলিটি ম্যানেজার হাসপাতালের ভিতরেই একাধিকবার তাঁকে ধর্ষণ করে। এই ফেসিলিটি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর পাশাপাশি একাধিক মহলা কর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে।পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত শেখ জাহির আব্বাস খান একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ওই হাসপাতালে কাজ করছিল। ১৪ সেপ্টেম্বর সে এক মহিলা সহকর্মীকে নানা অজুহাতে নিজের কাছে ডেকে নেয়। অভিযোগ, কাজ থেকে বরখাস্ত করার ভয় দেখিয়ে হাসপাতালে ভেতরেই শারীরিক নির্যাতন চালায় সে। কাউকে কিছু জানালে আরও বড় ক্ষতি করে দেওয়ার হুমকি দেয় আব্বাস। দীর্ঘদিন বিষয়টি গোপন রাখা হলেও সোমবার ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসে। সোমবার পাঁশকুড়া থানায় ওই তরুণী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।