কিছুদিন আগেই বউবাজারে শতাব্দী প্রাচীন একটি জরাজীর্ণ ভবনের একাংশ ভেঙে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা পুরসভা। এবার কলকাতা পুরসভা শহরের সমস্ত বিপজ্জনক পুরনো বাড়িগুলির নতুন করে সমীক্ষা শুরু করেছে। বর্ষার আগে এমন বাড়িগুলির হাল-হকিকত খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কলকাতা পুরসভা।
আরও পড়ুন: কলকাতায় বর্ষার আগে খালগুলি কী অবস্থায় রয়েছে? খতিয়ে দেখে পরিষ্কারের নির্দেশ
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিল্ডিং বিভাগকে বিপজ্জনক বাড়িগুলির একটি নতুন তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। তালিকা প্রস্তুত হলে তা বরো-ভিত্তিক ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে পাঠানো হবে। তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করবেন এবং কাঠামোগত দিক থেকে শুরু করে বাড়িগুলির নিরাপত্তা কতটা রয়েছে বা কী অবস্থায় রয়েছে তা খতিয়ে দেখবেন।
সূত্রের খবর, ৪-৬ নম্বর এই তিনটি বরো অঞ্চলে বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও, শহরের যেসব এলাকাগুলির বহু বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে সেই তালিকায় আছে কাশীপুর, দমদম, পাইকপাড়া, চিৎপুর, পাথুরিয়াঘাটা রোড, বউবাজার, এমজি রোড, এপিসি রায় রোড, তালতলা, এসএন ব্যানার্জি রোড ও লেনিন সরণি। এসব এলাকার কিছু ভবনকে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পুরসভা জানিয়েছে, এলিয়ট রোড, রিপন স্ট্রিট ও আশেপাশের কিছু লেনে এমন বহু পুরনো ভবন রয়েছে, যেগুলি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেইসব ভবনের বাসিন্দাদের সরে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে পুরসভার পক্ষ থেকে বিপজ্জনক বাড়ির অংশ ভাঙার অভিযান শুরু হয়েছিল। তবে গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল বেআইনি নির্মাণ ভাঙার দিকে। ফলে বিপজ্জনক বাড়িগুলির বিরুদ্ধে অভিযান কিছুটা ধীরগতিতে চলছিল।
লালবাজারের তরফে মধ্য কলকাতার বরো ৫ ও ৬-তে অবস্থিত অনিরাপদ ভবনগুলির একটি তালিকা তৈরি করে পুরসভার কাছে পাঠানো হয়েছে। শুধু ২০২৩ সালেই, এইসব এলাকায় ৫৭টি ভবনের মালিককে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বউবাজারের শ্রীনাথ দাস লেনে ঘটনার পর পুরসভা স্পষ্ট জানিয়েছে, এখন থেকে দ্রুততর পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ির তালিকা ধরে কাজ শুরু হবে বর্ষার আগেই। শহরের মানুষ যাতে নিরাপদে বসবাস করতে পারেন, সেই দিকেই জোর দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।