মুড়িগঙ্গা নদীতে পলি জমে থাকার ঘটনা আজকের নয়। এই সমস্যা প্রত্যেকবার দেখা যায় গঙ্গাসাগর মেলার সময়। তার জেরে চড়া তৈরি হয়। কাকদ্বীপের লট নম্বর ৮ থেকে সাগরের কচুবেড়িয়া জেটিঘাটে পৌঁছতে তাই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গঙ্গাসাগরে আসা পুণ্যার্থীদের। এবার সেটা হবে না। কারণ এবার ড্রেজিংয়ের কাজ করল রাজ্য সরকার। তার উপর গঙ্গাসাগর মেলায় আসা পুণ্যার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে মুড়িগঙ্গা নদী পারাপারের ক্ষেত্রে ৮টি বড় বার্জের ব্যবস্থা করছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। যা কিনা পুণ্যার্থীদের সাহায্য করবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এবার ভিড় সামাল দিতে বড় বড় বার্জে করে তীর্থযাত্রীদের দ্রুত পারাপার করানো হবে। এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক একটি বার্জে একসঙ্গে তিন হাজার তীর্থযাত্রীকে পারাপার করানো যাবে। আর ইসরোর তৈরি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করবে জেলা প্রশাসন। গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা, সুন্দরবন পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও এবং জেলার পুলিশ প্রশাসনের অফিসার–সহ জনস্বাস্থ্য কারিগরি, সেচ, বিদ্যুৎ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা আসেন।
আরও পড়ুন: খুনের লক্ষ্যে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে শুটআউট, গুলিবিদ্ধ যুবক, গ্রেফতার অভিযুক্ত
প্রত্যেকটি ভেসেল ও বার্জে ইসরোর বিশেষ প্রযুক্তির ডিভাইস লাগানো থাকবে। আর সেই ডিভাইসকে কাজে লাগিয়ে অ্যাপের মাধ্যমে ভেসেল–বার্জের লোকেশন ট্র্যাক করা হবে। নদীর জলের নাব্যতাও এই প্রযুক্তির মাধ্যমেই জানতে পারবে ভেসেলের চালক। এমনকী অন্ধকার বা কুয়াশার মধ্যে ভেসেল ও বার্জের চালক এই আধুনিক ডিভাইসের সাহায্যে গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন। বিমানবন্দরে যে মুভিং লাইট লাগানো থাকে তাও লাগানো হবে বলে সূত্রের খবর। ভেসেল এবং বার্জের চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি স্যাটেলাইট ফোনে যোগাযোগ রাখা হবে। মুড়িগঙ্গা নদীতে ইলেকট্রিক টাওয়ারে ফগ লাইট, লেজার লাইট লাগানোর পরিকল্পনা আছে।
২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুণ্যার্থীদের ভিড় বাড়লে বিশ্রামের ব্যবস্থা থাকবে। পানীয় জল, শৌচালয়, যাত্রী শেড সবই থাকছে। এই বিষয়ে জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, ‘জোরকদমে কাজ চলছে। ৫ এবং ৬ নম্বর স্নানঘাটের জন্য নতুন করে রাস্তা তৈরি হচ্ছে। ১ নম্বর স্নানঘাট প্রায় প্রস্তুত। গঙ্গাসাগর বাসস্ট্যান্ড থেকে তীর্থযাত্রীদের নামার পর পাঠানো হবে ১ নম্বর স্নানঘাটের দিকে। পুলিশের কন্ট্রোলরুম এবং পরিকাঠামোকে অন্যত্র সরানো হতে পারে।’ আর সুন্দরবনের পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাওয়ের কথায়, ‘এবার মেলায় ১২ হাজার পুলিশ এবং উচ্চপদস্থ অফিসাররা উপস্থিত থাকবেন। ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোনের ব্যবস্থা এবং থাকছে মেগা কন্ট্রোলরুম। স্পিডবোট এবং হোভারক্র্যাফ্ট নজরদারি চালাবে।’