এনআরসি নোটিস ঘিরে ফের উদ্বেগ ছড়াল উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে। এবার তুফানগঞ্জের বাসিন্দা ৫৮ বছর বয়সি মোমিনা বিবির হাতে পৌঁছল অসম ফরেন ট্রাইব্যুনালের চিঠি। অসমের ধুবড়িতে তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে আগামী মাসে। পুলিশের তরফে বুধবার তাঁর বাড়িতে গিয়ে এই নোটিস পৌঁছে দেওয়া হয় বলে পরিবারের দাবি।
আরও পড়ুন: অসমে বাংলার বাসিন্দাকে NRC নোটিস, প্রতিবাদে শিলিগুড়িতে মিছিলের ডাক গৌতমের
মোমিনা বিবি জানান, তিনি পশ্চিমবঙ্গের ভোটার, তুফানগঞ্জেরই বাসিন্দা। তাঁর কথায়, জন্ম হয়েছিল অসমে, সেখানেই তাঁর বিয়ে হয়েছিল প্রায় ১৮ বছর আগে। তবে বিয়ের এক বছরের মধ্যে স্বামী তালাক দেন। তারপর থেকে তিনি তুফানগঞ্জে পরিবারসহ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। এখানে জমি কিনে বাড়ি তৈরি করেছিলেন তাঁর প্রাক্তন স্বামীই। তিনি বরাবর এখানেই ভোট দিয়ে এসেছেন। আধার, ভোটার কার্ড সবই কোচবিহারের। অসমে কোনওদিন ভোটও দেননি। তাঁর প্রশ্ন, তাহলে কেন তাঁকে তৃতীয়বারের জন্য আবার অসমের ফরেন ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দিতে বলা হল? কেন এই নোটিস?
এর আগে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা উত্তমকুমার ব্রজবাসী ও আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার অঞ্জলি শীলের। তাঁরাও অসম থেকে পাওয়া এনআরসি সংক্রান্ত নোটিসে উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন মোমিনা বিবিও। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, এনআরসি এবং ডি-ভোটার সংক্রান্ত জটিলতায় বিভিন্ন সময়ে সীমান্তবর্তী জেলাগুলির বহু বাসিন্দাকেই এভাবে অসম ফরেন ট্রাইব্যুনালের চিঠি ধরিয়ে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বারবার আপত্তি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তবে মোমিনা বিবির পরিবারের দাবি, তাঁদের কাগজপত্র ঠিকঠাক। তা সত্ত্বেও এভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে। তুফানগঞ্জে বছরের পর বছর ধরে তিনি স্থায়ী বাসিন্দা। এখন কোথায় গিয়ে প্রমাণ দেবেন? সেই প্রশ্ন তোলেন। জেলা প্রশাসন বা পুলিশের তরফে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে এনআরসি ইস্যুতে ফের রাজ্য-অসম সীমানা ঘিরে আইনি জটিলতা ও আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হল বলেই মনে করছেন স্থানীয়েরা।