দাদা আর ভাইয়ের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে খুনের ঘটনা ঘটল। এই খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ভাইয়ের হাতে খুন হয়েছেন দাদা বলে অভিযোগ। এই হত্যাকাণ্ডের সময় নিজের স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাঁর স্ত্রীর উপরও হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। তাতে জখম হন মৃতের স্ত্রীও। বুধবার মাঝরাতে ক্যানিং থানার অন্তর্গত দিঘিরপাড় পঞ্চায়েতের পশ্চিম কুমার সা চকের মাঝেরপাড়া এলাকায় ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। তার জেরে রক্তগঙ্গা বয়ে যায় বাড়িতে। ইতিমধ্যেই দেহ উদ্ধার করে পুলিশ পাঠিয়ে দিয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। আর দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত ব্যক্তির নাম শাহাজাহান সর্দার। আর তাঁর বাবা কাছেম সর্দার। এই কাছেম সর্দারের তিন স্ত্রী। প্রথমপক্ষের সন্তান হল শাহজাহান সর্দার। দ্বিতীয়পক্ষের সন্তান আমির আলি সর্দার। এই দুই ভাইয়ের মধ্যে গত তিন বছর ধরে ছ’কাঠা জমির সম্পত্তি নিয়ে অশান্তি চলছিল। মাঝেমধ্যেই একে অপরকে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করত সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে। হুমকি থেকে শুরু করে নানা অসুবিধা তৈরি করত আমির বলে শোনা যেত। কিন্তু এসব করে কাজ না হওয়ায় সম্পত্তি দখল করতে দাদা শাহজাহানকে খুন করার ষড়যন্ত্র করে আমির আলি। সেটাই হয়েছে।
আরও পড়ুন: মেটালিক ইলুমিনেটিং ল্যাম্প বসছে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে, কেন এমন পদক্ষেপ হচ্ছে?
পরিবার সূত্রে খবর, বুধবার জামাইয়ের বাড়ি থেকে ফিরে আসেন শাহজাহান ও তাঁর স্ত্রী জুবেদা। তখন সুযোগ পেয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে দাদা শাহজাহানের উপর অতর্কিতে হামলা চালায় ভাই আমির আলি। কিছু বুঝে ওঠার আগে ধারালো অস্ত্রের কোপে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন শাহজাহান। এই পরিস্থিতি দেখে স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে যান স্ত্রী জুবেদা। তখন তাঁকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। শাহজাহানের স্ত্রীর চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশী এবং নিকট আত্মীয়রা। তখন অবস্থা প্রতিকূল বুঝে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত ভাই আমির আলি। পুলিশ এখন তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভাই আমির আলি সর্দারের হাতে খুন হয়েছেন দাদা শাহজাহান সর্দার বলে প্রমাণ মিলেছে। তাও দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে নিয়ম অনুযায়ী। তড়িঘড়ি শাহজাহান ও তাঁর স্ত্রী জুবেদাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা শাহাজাহানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই খবর গ্রামে পৌঁছতেই আজ, বুধবার অভিযুক্তের বাড়িঘর ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। সেখানে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মৃত শাহজাহানের ছেলে রফিকুল সর্দার বলেন, ‘৬ কাঠা জমির সম্পত্তি নিয়ে বাবার সঙ্গে নিত্যদিন অশান্তি লেগে থাকত কাকার। তাই এভাবে বাবাকে খুন করা হয়েছে।’