আমফান আক্রান্তদের পুনর্বাসনে আর্থিক সাহায্য বণ্টনে প্রায় ৪০,০০০ দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে ৩৪,০০০টির সপক্ষে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। শুক্রবার প্রশাসনিক সূত্রে এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে।প্রশাসনের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, আমফান ত্রাণ থেকে বঞ্চিত ওই ৩৪,০০০ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২০,০০০ টাকা করে জমা দেওয়া হবে। পাশাপাশি, অনিয়মের জেরে পঞ্চায়েত সদস্য ও কর্মীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। শুধু তাঁরাই নন, অভিযুক্ত অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা বিডিওদের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে প্রশাসন, সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে এই তথ্য জানিয়েছেন এক প্রশাসনিক আধিকারিক। ওই আইএএস আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধানের পরে ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকার বাসিন্দা ও তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ওই সমস্ত বাসিন্দাদের মধ্যে যাঁরা অর্থ সাহায্য পাননি, তাঁদের অ্যাকাউন্ট পিছু ২০,০০০ টাকা জমা দেওয়া হবে। জেলা স্তরে প্রায় ৩৪,০০০ প্রকৃত অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে, যাঁরা আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও ত্রাণ পাননি।’দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ার পরে রাজ্য সরকারের নির্দেশে নদিয়া জেলার বেশ কিছু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সম্পত্তি নষ্ট না হলেও ওই সব অ্যাকাউন্টে ত্রাণের অর্থ জমা পড়েছিল বলে জানা গিয়েছে। একই রকম পরিস্থিতিতে অন্যান্য জেলাতেও বেশ কিছু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার নির্দেশ দিতে জেলাশাসকদের বার্তা পাঠিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।ঘটনার জেরে পাঁচ জন বিডিও-কে শো-কজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আইএএস অফিসার জানিয়েছেন, ‘ব্লক স্তরে প্রশাসনিক আধিকারিকদের উপরে সরকারি ত্রাণ বণ্টনের সময় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের চাপ সৃষ্টি করার বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে।’আমফান তাণ্ডবের জেরে সরকারি অর্থ সাহায্য বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগ মিলেছে উত্তর ২৪ পরগনী, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া ও হাওড়া জেলা থেকেও। জানা গিয়েছে, বঞ্চিতদের ক্ষতিপূরণ খাতে ইতিমধ্যে ৬,৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।এর আগে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি অভিযোগ জানায় যে, জেলায় তৃণমূল নেতাদের ঘনিষ্ঠ আত্মী-স্বজনদের অ্যাকাউন্টে অবৈধ ভাবে সরকারি ত্রাণের অর্থ জমা পড়েছে। ওই সমস্ত ব্যক্তির বাড়িঘর আমফানে আদৌ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেন বিরোধীরা।ত্রাণ বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তা বাস্তবায়িত করার পথে নামল রাজ্য প্রশাসন।