চুঁচুড়ার এক বালিকা বিদ্যালয়ে স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরিকে কেন্দ্র করে সামনে এল তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। একদিকে সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যদিকে বিধায়ক অসিত মজুমদার। বিধায়কের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রচনা। আর এই বিতর্কের আবহেই স্কুলের পদ থেকে আচমকা সরে দাঁড়ালেন বিধায়ক ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কাউন্সিলর গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়। যার জেরে দলের অস্বস্তি আরও বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ৫২-তেও ধরে রেখেছেন যৌবন! কী খেয়ে রচনা এমন, ব্যাগ থেকে খুঁজে বার করলেন সন্দীপ্তা
ঘটনার কেন্দ্রে চুঁচুড়ার বাণীমন্দির বালিকা বিদ্যালয়। জানা যাচ্ছে, সাংসদ তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করে চালু হওয়া স্মার্ট ক্লাসরুম প্রকল্পে বিধায়কের হস্তক্ষেপ নিয়ে ক্ষুব্ধ রচনা। বৃহস্পতিবার ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের সামনে তিনি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। দাবি করেন, স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার স্কুলে গিয়ে শিক্ষিকাদের সঙ্গে অপমানজনক ভাষায় কথা বলেছেন এবং প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। রচনার কথায়, বিধায়কের আচরণে তিনি হতবাক। এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নে সাংসদ তহবিল ব্যবহার করাটাই তো তাঁর দায়িত্ব। তিনি মানুষের পাশে আছেন, ভবিষ্যতেও থাকব। কেউ যদি বাধা দিতে চায়, দেখে নেবেন। এই বক্তব্যের পর থেকেই জেলা রাজনীতিতে গুঞ্জন শুরু হয়। আর ঠিক তখনই নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন চুঁচুড়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও বর্তমান কাউন্সিলর গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়। তিনি ছিলেন স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য।
গৌরীর দাবি, ঘটনার দিন তিনি বিধায়কের সঙ্গে ছিলেন। তিনি কেবলমাত্র জানতে চেয়েছিলেন, স্কুলে যারা কাজ করছেন তাদের পরিচয়পত্র আছে কি না। কারণ, এটা একটি বালিকা বিদ্যালয়। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কর্তব্য। তিনি অভিযোগ করেন, ঘটনার রাজনৈতিক রং চড়িয়ে বিধায়ককে অপমান করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি ওই পদে থাকতে পারেন না। পদত্যাগপত্র তিনি জমা দিয়েছেন স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি এবং প্রশাসনিক স্তরে ডিআই, এসডিও ও জেলাশাসককেও চিঠি পাঠিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে মুখ না খুললেও, বিধায়ক অসিত মজুমদার জানিয়েছেন, তিনি স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য হিসেবে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের দায় দায়িত্ব পালন করেছেন। যদি কেউ অভিযোগ করতে চান, আইনি পথে এগোন। সাংসদ সম্পর্কে কিছু না বললেও, তিনি ইঙ্গিত দেন যে দলীয় বিষয় দলেই আলোচনার উপযুক্ত। তবে এই বিরোধ তৃণমূলের অন্দরের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। একদিকে সাংসদের তোপ, অন্যদিকে বিধায়কপন্থী কাউন্সিলরের ইস্তফা সব মিলিয়ে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে।