মালদার মোথাবাড়ি ব্লকে তৃণমূল-বিজেপি রাজনৈতিক সংঘাত ফের মাথাচাড়া দিল। অভিযোগ উঠেছে, তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যার আত্মীয়ের বাড়িতে গভীর রাতে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর জখম হয়েছেন দুইজন। মহিলার হাতে কোপ মারার পাশাপাশি, হাত কেটে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: কোন্নগরে TMC নেতা খুনে গ্রেফতার ‘বাম আমলের ত্রাস’ কুখ্যাত গ্যাংস্টার বাঘা
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে, মোথাবাড়ি থানার অন্তর্গত রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী সুষমা মণ্ডল রায়ের বাড়িতে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। অভিযোগ, বিজেপি নেতা শ্যামল কর্মকারের নেতৃত্বে কয়েকজন বাড়িতে ঢুকে সশস্ত্র হামলা চালায়। সুষমার বাম হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মেরে গুরুতর জখম করা হয়। এমনকি তাঁর হাত কেটে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলেও পরিবারের দাবি। মহিলার বুকেও আঘাত লাগে ধারালো অস্ত্রের কোপে। স্ত্রীকে রক্ষা করতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর স্বামী বাপি রায়।
রাতেই আহত স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুজনেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন। আক্রান্ত বাপি রায় জানান, তাঁর বউদি মালা রায় রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্য। সেই সূত্রেই তাঁদের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। আর এই রাজনৈতিক যোগসূত্রের কারণেই বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁদের নিশানা করেছে বলে তাঁর অভিযোগ। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়। খবর পেয়ে মোথাবাড়ি থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ ইতিমধ্যেই চারজনকে আটক করেছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, এলাকায় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা লাগাতার অশান্তি ছড়াচ্ছে। কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লক তথা মোথাবাড়ি ব্লকের তৃণমূল সভাপতি ফিরোজ শেখ সরাসরি অভিযোগ করেছেন, রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। শ্যামল কর্মকার তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে। এলাকার পরিবেশ অশান্ত করার চেষ্টা চলছে। পুলিশের কাছে কড়া পদক্ষেপের দাবি করেছে। অন্যদিকে, বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দক্ষিণ মালদার জেলা সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, পুরোটাই গ্রাম্য বিবাদ। এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। বরং তৃণমূল নিজেরাই দুষ্কৃতী পুষছে। নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দলের ফলেই এই সংঘর্ষ।