প্রত্যেক মানুষই চায় জীবনে অর্থ সঞ্চয় করতে। কিছু মানুষ অল্প পরিশ্রম করেই অর্থ উপার্জন করে সঞ্চয় করতে পারেন আবার কিছু মানুষ প্রচুর পরিশ্রম করলেও বাড়িতে অর্থ রাখতে পারেন না। বাড়িতে অর্থ ধরে না রাখতে পারার অন্যতম একটি কারণ হলো বাস্তুদোষ।
বাস্তুশাস্ত্র মতে, মাটির জিনিসের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাচীন বিশ্বাস অনুযায়ী, মাটি, পৃথিবী, আগুন, জল, বায়ু এবং আকাশের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষমতা রাখে। মাটির কোনও জিনিস যদি আপনার বাড়িতে আপনি রাখতে পারেন তাহলে আপনার বাড়ি নেতিবাচক প্রভাব দূর হয়ে গিয়ে ইতিবাচক শক্তির সঞ্চার হবে।
আজ এই প্রতিবেদনে দেখে নিন বাস্তুশাস্ত্র মতে এমন কোন পাঁচটি মাটির জিনিস আছে, যা আপনার বাড়িতে রাখলে ধনসম্পত্তিতে ভরে উঠবে আপনার জীবন। কাজে আসবে সাফল্য এবং জীবনে বজায় থাকবে সুখ শান্তি।
আরও পড়ুন: বিঘ্নহর্তার আশীর্বাদে নাশ হবে শত্রু, ঋণ থেকেও মুক্তি! গণেশ চতুর্থীতে পাঠ করুন এই মন্ত্র
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর আগে ঠাকুরের আসনে রাখুন এই শুভ বস্তু, দূর হবে অভাব! হাসি ফুটবে মুখে
তাহলে আর দেরি না করে এক নজরে দেখে নিন সেই ৫টি মাটির জিনিসের নাম:
ক্লে পিগি ব্যাঙ্ক: বাস্তুশাস্ত্র মতে, মাটির তৈরি পিগি ব্যাঙ্ক অর্থনৈতিক শক্তিকে শক্তিশালী করতে এবং সঞ্চয়কে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এই মাটির পিগি ব্যাঙ্ক শুধু আপনার সঞ্চয়ের অভ্যেস গড়ে তুলবে তা নয়, আপনার অর্থকে ধরে রাখতেও সাহায্য করবে। বাড়ির উত্তর-পূর্ব অর্থাৎ ঈশান কোণে এই মাটির পিগি ব্যাঙ্ক রেখে যদি প্রতিদিন নিয়মিত অর্থ সঞ্চয় করতে পারেন তাহলে আপনার জীবন থেকে দারিদ্রতা দূর হয়ে যাবে।
মাটির গণেশ লক্ষ্মী মূর্তি: গণেশ হলেন বাধা বিনাশকারী এবং মা লক্ষ্মী হলেন সম্পদের দেবী। মাটির মূর্তিতে প্রাকৃতিক শক্তি পরিপূর্ণ থাকে যা বাড়ি থেকে নেতিবাচক শক্তি দূর করে দিতে সাহায্য করে। আপনি যদি বাড়িতে মাটির গণেশ লক্ষ্মীর মূর্তি রেখে পুজো করতে পারেন তাহলে আপনার জীবন থেকে কেটে যাবে সমস্ত নেতিবাচকতা। দীপাবলি বা যে কোনও শুভ সময়ে এই মূর্তিগুলি বাড়ির পূর্ব বা উত্তর দিকে স্থাপন করুন। নিয়মিত পরিষ্কার করুন এবং চন্দন ফুল প্রদীপ সহযোগে পুজো করুন।
আরও পড়ুন: ঘরে আলমারি কোন দিকে রাখা শুভ? কী বলছে বাস্তুশাস্ত্র দেখে নিন
আরও পড়ুন: শনির দশা সবচেয়ে কঠিন, কিন্তু সৎ ও পরিশ্রমীরা পায় শুভ ফল যা বদলে দেয় জীবনের দিশা
মাটির জলের পাত্র: একটা সময় ছিল যখন মটকা অথবা মাটির জলের পাত্র থাকত প্রত্যেক বাড়িতে। এই পাত্রে জল যেমন ঠান্ডা এবং বিশুদ্ধ থাকত তেমন মাটির জলের পাত্র জল রাখলে বাড়ি থেকে ইতিবাচক প্রভাব দূর হয়ে যেত। তবে কালের নিয়মে এখন অনেক বাড়িতেই দেখা যায় না এই মাটির পাত্র। আপনি যদি মাটির এই জলের পাত্র কিনে এনে ঘরের উত্তর পূর্ব দিকে রাখতে পারেন, তাহলে আপনার জীবন থেকে সমস্ত নেতিবাচকতা দূর হয়ে যাবে। প্রতিদিন জল পরিস্কার করে মাটির পাত্রটি পরিষ্কার করতে হবে আপনাকে। খেয়াল রাখবেন, পাত্রের কাছে কোনও ময়লা বা জঞ্জাল যেন না জমে তাহলে শুভ প্রভাব কমে যেতে পারে।
মাটির প্রদীপ: প্রদীপের আলো অন্ধকারকে দূর করে। সারাবছর না হলেও দীপাবলীর সময় মাটির প্রদীপ জ্বালাতে দেখা যায় অনেককে। তবে যদি আপনি প্রত্যেকদিন সন্ধ্যাবেলায় বাড়ির প্রবেশদ্বার অথবা পুজোর ঘরে মাটির প্রদীপ চালাতে পারেন তাহলে আপনার জীবন থেকে সমস্ত সংশয় দূর হয়ে যাবে। প্রদীপ জ্বালানোর সময় ব্যবহার করতে হবে ঘি অথবা তেল। খেয়াল রাখবেন প্রদীপ জ্বালানোর আগে যেন সেটি পরিষ্কার থাকে।
মাটির তুলসী মঞ্চ: হিন্দু মতে তুলসী অত্যন্ত পবিত্র এটি গাছ। যখন এই গাছ একটি মাটির পাত্রে রোপন করা হয়, তখন তার প্রভাব আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে। বাড়ির উত্তর-পূর্ব বা পূর্বদিকে যদি মাটির তুলসী মঞ্চ রাখেন, সকাল - সন্ধ্যা যদি প্রদীপ জ্বালাতে পারেন, তাহলে বাড়ি থেকে নেতিবাচক শক্তি সরে গিয়ে ইতিবাচক শক্তির সঞ্চার হবে।
প্রসঙ্গত, প্রতিদিন মাটির জিনিসপত্র পরিষ্কার করুন। ভাঙা অথবা ফাটা মাটির জিনিস ঘরে রাখবেন না। মাটির জিনিসপত্র রাখার আগে গঙ্গা জল বা পরিষ্কার জল দিয়ে সেগুলি পরিষ্কার করে তারপর রাখুন।