বুধবার দুপুরে আচমকাই সোশ্যাল মিডিয়ায় লম্বা পোস্ট করে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মনোজ তিওয়ারি। তাঁর এই আচমকা অবসরে অবাক হয়েছে প্রত্যেকে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে সিএবি এবং বাংলা দল। আর কয়েক দিন পরই ঘরোয়া ক্রিকেটের মরশুম শুরু হবে। তার আগে মনোজের এই ভাবে অবসর নেওয়া কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না সিএবি কর্তারা।
গত মরশুমেও বাংলা দলের অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি। শক্ত হাতে বাংলা দলকে সামলাতেন মনোজ। দলের খারাপ সময় থেকে টেনে তুলেছেন। সে ব্যাটিং হোক কিংবা অধিনায়কত্ব। সবদিকেই নিজের সেরাটা দিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর স্বপ্ন ছিল বাংলাকে রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন করা। সেই সুযোগ পেলেও তা অল্পের জন্য হাতছাড়া হয়েছে। তাঁর এই আচমকা অবসরের ফলে রঞ্জি জয়ের স্বপ্ন অধরা থেকে গেল। কিন্তু কেন হঠাৎ অবসর নিলেন বাংলার অন্যতম সেরা ক্রিকেটার? প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে।
তবে তাঁর আবেগঘন পোস্ট অনেক কিছু সামনে এনেছে। বিশেষ করে ভারতীয় দলে ভালো পারফরম্যান্স করার পরও ব্রাত্য থাকতে হয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ে শতরান করার পরের ম্যাচেই বসতে হয়েছে। তিনিও যে রাজনীতির শিকার হয়েছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ভারতের জার্সি গায়ে ১২টি ওডিআই ম্যাচ খেলেছেন মনোজ। করেছেন ২৮৭ রান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৯৯০৮ রান রয়েছে তাঁর। লিস্ট এ ক্রিকেটে রয়েছে ৫৫৮১ রান। বাংলার অন্যতম ভরসার ক্রিকেটার ছিলেন তিনি। তাঁর এই অবসরের সিদ্ধান্তের কথা সিএবি কর্তাদেরকেও জানাননি তিনি। সিএবি কর্তারাও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে জানতে পেরেছেন।
তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন মনোজ। তিনি লিখেছেন, 'ক্রিকেট খেলাকে বিদায় জানালাম। এই খেলা আমাকে সব কিছু দিয়েছে। প্রত্যেকটা ছোটখাটো জিনিস, যা আমি কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি। জীবনে বার বার অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। ক্রিকেট খেলার প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। ঈশ্বরের প্রতিও, যিনি বরাবর আমার পাশে থেকেছেন। যাঁরা আমার এই ক্রিকেটযাত্রায় পাশে থেকেছেন তাঁদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ক্রিকেট জীবনে যা কিছু অর্জন করেছি তার জন্যে ছোটবেলার কোচ থেকে শুরু করে গত বছরও যার অধীনে খেলেছি, তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ। আমার এই যাত্রায় মানবেন্দ্র ঘোষ শুধু কোচই ছিলেন না, আমার বাবার মতো ছিলেন। উনি না থাকলে আজ ক্রিকেটে এত দূর আসতে পারতাম না। আপনাকে ধন্যবাদ। এই মূহূর্তে আপনার শরীর ভাল নেই। তাই দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। ধন্যবাদ বাবা-মাকে। কখনও পড়াশোনার জন্যে অতিরিক্ত চাপ দেননি আমাকে। ক্রিকেট খেলতে উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন। আমার জীবনে আসার পর থেকে সব সময় পাশে দাঁড়ানোর জন্যে স্ত্রী সুস্মিতাকে ধন্যবাদ। যারা আমার পাশে থেকেছে, বিশেষ করে যাদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করেছি, সেই সব সতীর্থদেরও ধন্যবাদ জানাই। সিএবি এবং কর্তাদেরও ধন্যবাদ জানাই। আমার পাশে থেকেছে তারা। সবরকম সাহায্য করেছে। আমি তাদের অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাই।' সবশেষে তিনি লিখেছেন, 'ধন্যবাদ ক্রিকেট।'
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।