মহারাষ্ট্রের বান্ধবীর সামনে এক যুবককে নির্মমভাবে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। নিহত যুবকের নাম সুলেমান খান (২০)। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং মূল অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মহারাষ্ট্রের জলগাঁও জেলার জামনে ঘটনাটি ঘটেছে। গত সোমবার সুলেমান খান জামনে গিয়েছিলেন পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষার ফর্ম ফিলআপ করতে। সেখানে একটি ক্যাফেতে এক নাবালিকা বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। সেই সময় হঠাৎ দশজন ব্যক্তি ওই যুবককে ঘিরে ফেলে এবং মারধর শুরু করে। এখানেই শেষ হয়, এরপরে জোর করে তাকে টেনে হিঁচড়ে নিজের গ্রাম বেতাওয়াদ খুর্দে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাসস্ট্যান্ডে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে ওই যুবককে বেধড়ক পেটানো হয়।খবর পেয়েই সুলেমানের পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে এসে বাধা দিলে তাঁদের উপরও হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় সুলেমানকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন-কারেন্ট চলে যাওয়ায় ‘চপ্পল’ প্রতিবাদ, বিধায়ক মিছিলের মধ্যেই গায়েব হল প্রচুর জুতো
অন্যদিকে, ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়, যার ফলে সংবেদনশীল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সোমবার রাতে নিহতের পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয়রা জামনে থানার সামনে জমায়েত হয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানান।পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পুরনো শত্রুতার জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। মামলাটি অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিভিন্ন ধারায় দায়ের হয়েছে এবং একাধিক দিক থেকে তদন্ত চলছে। জলগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মহেশ্বর রেড্ডি জানান, 'একই দিনে চারজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারপর আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং আমরা পাঁচ দিনের জন্য অভিযুক্তদের হেফাজত পেয়েছি। একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠনের জন্য আমাদের অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি।'
আরও পড়ুন-কারেন্ট চলে যাওয়ায় ‘চপ্পল’ প্রতিবাদ, বিধায়ক মিছিলের মধ্যেই গায়েব হল প্রচুর জুতো
এদিকে, সুলেমানের কাকা এবং সরপঞ্চ সাবির খান বলেন, যে ক্যাফে থেকে ওই যুবককে অপহরণ করা হয়েছিল সেটি পুলিশ স্টেশনের ঠিক পাশেই অবস্থিত। তিনি বলেন, 'সুলেমান পুলিশে যোগ দিতে চেয়েছিল এবং পরীক্ষার জন্য ফর্ম ফিলআপ করতে বেরিয়েছিল। সে বন্ধুদের সঙ্গেই ছিল।কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে অপহরণ করে এবং নির্মমভাবে মারধর করে। এমনকি তারা তার নখও উপড়ে ফেলে। শরীরের প্রতিটি অংশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ৬-৭ ঘন্টা ধরে তাকে একটানা নির্যাতন করার পর, তারা তাকে গ্রামে নিয়ে আসে।' তিনি আরও বলেন, 'তারা সুলেমানকে আবার তার বাড়ির সামনে মারধর করে। বাবা, মা এবং বোন ছেলেকে বাঁচাতে ছুটে আসেন। তাদেরও মারধর করা হয়। পুলিশ এবং প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন, পরিবার যেন ন্যায়বিচার পায়।'