এভাবেই রসিকতা করলেন তিনি। ফ্রি–হ্যান্ড ব্যায়াম করলেন। আর অন্য সাংসদদেরও করতে বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাস্থ্যই সম্পদ—দলীয় সাংসদের এই বার্তাই দেন। আসলে বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। জোরদার প্রচার করতে হবে। সেখানে শরীর ফিট না রাখলে দৌড়ঝাঁপ করা যাবে না। কংগ্রেস নেতার সঙ্গে কথা বলে উঠে দাঁড়ান মমতা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদরা।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখনই সংসদে আসেন তখনই সেখানে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের দফতরে সময় কাটান। এমনকী সংসদের হাল–হকিকত জেনে নেন। আবার পরের পদক্ষেপ কি হওয়া উচিত, তাও জানিয়ে যান তৃণমূল সুপ্রিমো। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। নয়াদিল্লি থেকে ফেরার আগে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় দফতরে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ সাংসদরা। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন–সহ একাধিক সাংসদরা। সেখানে কফির তুফানের সঙ্গে চলে দেদার আড্ডা। রাজনীতির বাইরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কতটা রসিক তা অনেকেরই অজানা।
ইতিমধ্যেই নয়া সংসদ ভবনে রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে অন্যান্য সাংসদরা দেখেছেন তাঁর প্রশাসনির রূপ। তার পরে বিজয় চকে সাংবাদিক সম্মেলন। সেখানে দেখতে পাওয়া গিয়েছে পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদের রূপ। আবার যখন তৃণমূলনেত্রী ফিরে আসেন পুরনো সংসদে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় দফতরে, তখন দেখা গেল রসিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যা অন্যান্য সাংসদদের অনেকটা অক্সিজেন জোগাল বলে মনে করা হচ্ছে। ঘরে ঢুকেই বসেন নিজের পুরনো চেয়ারেই। তারপরই সাংসদদের সঙ্গে শুরু করেন পুরনো দিনের গল্প। সেখানেই রসিকতা করেন তিনি। আর সকলের খোঁজখবর নিয়ে টোস্ট–কফি হাতে চলে আলোচনা।
এই আড্ডা চলাকালীনই হঠাৎ সেখান থেকে উঠে দাঁড়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন তাঁর দিকে তাকিয়ে সকলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেসে বলেন, ‘না না, এখনই যাচ্ছি না। সকালে হাঁটা হয়নি। তাই একটু হাত–পা চালিয়ে নিজেকে সচল করে নিচ্ছি।’ আসলে অনেকেই ভেবেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বোধহয় চলে যাচ্ছেন। এভাবেই রসিকতা করলেন তিনি। তার পরে ফ্রি–হ্যান্ড ব্যায়াম করলেন। আর অন্য সাংসদদেরও করতে বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাস্থ্যই সম্পদ—দলীয় সাংসদের এই বার্তাই দেন। আসলে বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। জোরদার প্রচার করতে হবে। সেখানে শরীর ফিট না রাখলে দৌড়ঝাঁপ করা যাবে না।
এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখান থেকে বেরোনোর আগে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা দিগ্বিজয় সিং। প্রথমে সাংসদদের ভিড় দেখে ইতস্তত করছিলেন দিগ্বিজয়। পরে তিনি সেখানে এসে বসতেই মমতা বন্দ্যোপাধয়ায় প্রশ্ন করেন, ‘আপনাদের তো মধ্যপ্রদেশে জেতা নিশ্চিত ছিল। কী এমন ঘটল?’ হারের কারণ ব্যাখ্যা করা শুরু করেন দিগ্বিজয়। কংগ্রেস নেতার সঙ্গে কথা বলে নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার যে ফিরতে হবে। তাই সবাইকে শুভ বড়দিন এবং নতুন বছরের বিপুল শুভেচ্ছা জানিয়ে বিমানবন্দরের পথে রওনা হন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।