শুল্ক ইস্যুতে চিন, মেক্সিকো এবং কানাডার মতো আচরণ করা হবে না ভারতের সঙ্গে। নয়াদিল্লিতে আসা মার্কিন কর্তারা এমনটাই দাবি করলেন ভারতীয় আমলাদের কাছে। এদিকে প্রতিশোধমূলক শুল্কের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ভারতের বিরুদ্ধে সুর নরম করতে পারেন, তার ইঙ্গিতও মিলেছে সম্প্রতি। এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ২ এপ্রিল থেকে ভারতের মতো দেশগুলির উপর প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করা হবে। তবে তাঁর সর্বশেষ বিবৃতি থেকে বোঝা যাচ্ছে যে তিনি এই নীতিটি পুনর্বিবেচনা করতে পারেন। ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে অনেক দেশকে প্রতিশোধমূলক শুল্ক থেকে ছাড় দেওয়া যেতে পারে। (আরও পড়ুন: মতুয়াদের পুণ্যস্নান আজ, তার আগে 'বোধদয়', বারুণী মেলায় মমতাবালর সঙ্গেই শান্তনু)
আরও পড়ুন: 'ভারত-চিন সম্পর্কে ইস্যু থাকবে ভবিষ্যতেও, তবে...', অকপট জয়শংকর
এদিকে ট্রাম্পের সেই ইঙ্গিতের আবহেই ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনায় বসেছেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৬ মার্চ নয়াদিল্লিতে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব রাজেশ আগরওয়াল এবং মার্কিন সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চের নেতৃত্বে দিল্লিতে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই বৈঠকের পরই ভারতের একজন আধিকারিক হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, 'এটা এখন স্পষ্ট যে চিন, মেক্সিকো এবং কানাডার মতো দেশের সঙ্গে একসারিতে রাখা হচ্ছে না ভারতকে। আমেরিকা এই ক্ষেত্রে পার্থক্য করছে। অবৈধ অভইবাসন, নিরাপত্তার ইস্যু সহ একাধিক বিষয়ে তাদের (আমেরিকা এবং চিন, কানাডা, মেক্সিকো) মধ্যে গুরুতর সমস্যা রয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে শুধুমাত্র শুল্ক সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, সেটাও বন্ধুত্বপূর্ণভাবে সমাধান হচ্ছে।' (আরও পড়ুন: RAW-কে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো USCIRF-কে তুলোধোনা ভারতের, প্রশ্ন প্যাটার্ন নিয়ে)
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে সামরিক হাসপাতালে মৃত্যু খলিস্তানি জঙ্গি নেতা মহল সিং বব্বরের
সূত্রের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, অটোমোবাইল, হুইস্কি এবং কিছু কৃষি পণ্য, বিশেষত জেনেটিক্যালি মডিফায়েড (জিএম) খাদ্য পণ্যগুলির জন্য ভারতের কাছ থেকে বৃহত্তর বাজারে প্রবেশাধিকার চাইতে পারে আমেরিকা। তবে হোয়াইট হাউজের বাণিজ্য নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন বিভাগ থেকে প্রাপ্ত পরামর্শের ভিত্তিতে আলোচনার জন্য একটি 'টার্মস অফ রেফারেন্স' প্রস্তুত করেছে মন্ত্রক।
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প সব চিনা আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, যা ৪ মার্চ বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়। চিন কয়লা এবং তরল প্রাকৃতিক গ্যাস পণ্যগুলিতে ১৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি এবং বৃহত-স্থানচ্যুতি গাড়িগুলিতে ১০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে 'প্রতিশোধ' নিয়েছিল আমেরিকা। একই সাথে, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে রফতানি হওয়া বেশিরভাগ পণ্যগুলিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তি (ইউএসএমসিএ) মেনে চলা পণ্যগুলিতে শুল্ক চাপানো হয়নি এখনও। তা ২ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।