দেশের মাটিতে বিদেশিদের ‘জাঁকিয়ে বসা’ আটকাতে এবার কড়া পদক্ষেপ কানাডার। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের, বিশেষ করে ভারত থেকে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য কানাডার স্টাডি পারমিট সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। ইমিগ্রেশন, রিফিউজি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কানাডা-এর তথ্য অনুযায়ী, সে দেশে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য জারি করা স্টাডি পারমিটের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। (আরও পড়ুন: ইউনুসের বিদায়বেলা ঘনিয়ে আসতেই দিল্লির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক বাংলাদেশি উপদেষ্টা)
আরও পড়ুন: অপারেশন সিঁদুরে অবদান, সেই মহিলা অফিসারের চাকরির নিশ্চয়তা নেই! বড় নির্দেশ SC-র
জানা গেছে, কানাডায় উচ্চশিক্ষার জন্য স্টাডি পারমিট পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বড় পরিবর্তন এসেছে। কানাডার ইমিগ্রেশন, রিফিউজিস অ্যান্ড সিটিজেনশিপ-এর সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে ভারতীয়দের দেওয়া স্টাডি পারমিটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩০,৬৪০-এ। এই সংখ্যা ২০২৪ সালের একই সময়ে ছিল ৪৪,২৯৫। অর্থাৎ, এক বছরে প্রায় ৩১ শতাংশ কমেছে স্টাডি পারমিটের সংখ্যা।এই হ্রাস একটি বৃহত্তর প্রবণতার অংশ, যেখানে কানাডা সরকার ২০২৩ সালের শেষ থেকে আন্তর্জাতিক ছাত্রদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে আনতে পদক্ষেপ নিচ্ছে। (আরও পড়ুন: মাকে তালাক দিয়েছিল বাবা, পাক গুপ্তচর তোফায়েল শরিয়ত চালু করতে চাইত ভারতে)
আরও পড়ুন-ট্রাম্পের রক্তচক্ষুতে হার্ভার্ডে পাঠরত ভারতীয় পড়ুয়াদের কী হবে? পড়লেন বিপাকে
২০২৩ সালে কানাডা মোট ৬,৮১,১৫৫টি স্টাডি পারমিট ইস্যু করেছিল, যার মধ্যে ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা ছিল ২,৭৮,০৪৫। ২০২৪ সালে মোট পারমিট সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৫,১৬,২৭৫, যার মধ্যে ভারতীয়দের জন্য বরাদ্দ ছিল ১,৮৮,৪৬৫টি। অর্থাৎ, মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ভারতের ক্ষেত্রে প্রায় ৯০,০০০টি পারমিট কমেছে।কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির মতে, অস্থায়ী বাসিন্দা যেমন বিদেশি ছাত্র ও কর্মীরা ২০২৮ সালের মধ্যে দেশের মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশের বেশি হবে না। এই লক্ষ্যে ২০২৫ সালের জন্য স্টাডি পারমিটের সংখ্যা সীমিত করে ৪,৩৭,০০০ করা হয়েছে, যেখানে ২০২৪ সালের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪,৮৫,০০০। ২০২৬ সালেও এই সীমা বজায় থাকবে।
আরও পড়ুন: 'শুধু বাংলাদেশ কেন, সেভেন সিস্টারেরও বন্দর চট্টগ্রাম', হঠাৎ যেন সুর বদল ঢাকার!
২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, স্টাডি পারমিট আবেদনকারীদের দেখাতে হবে যে তাদের কাছে ২০,৬৩৫ কানাডিয়ান ডলার অর্থাৎ প্রায় ১২.৭ লক্ষ টাকা রয়েছে, যা আগের নিয়মে ছিল ১০,০০০ কানাডিয়ান ডলার অর্থাৎ প্রায় ৬.১৪ লক্ষ টাকা।এছাড়াও, এখন থেকে প্রত্যেক আবেদনকারীর অ্যাকসেপ্টেন্স লেটার আইআরসিসি-র মাধ্যমে যাচাই করতে হবে। এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে। এই নিয়মের উদ্দেশ্য হল জাল আবেদন রুখে দেওয়া এবং আবেদন প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ করা।ফলে যেসব ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রী কানাডায় পড়াশোনার পরিকল্পনা করছেন, তাদের এই নতুন নিয়মগুলি মাথায় রেখে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। স্টাডি পারমিটের আবেদন ফি ১৫০ কানাডিয়ান ডলার এবং বায়োমেট্রিক সংগ্রহের জন্য আলাদা করে ৮৫ কানাডিয়ান ডলার দিতে হতে পারে।এই পরিবর্তনের জেরে কানাডায় পড়তে যাওয়ার পরিকল্পনা করা অনেক ছাত্র-ছাত্রীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। তাই সকল আবেদনকারীকে নতুন নিয়ম সম্পর্কে সচেতন থেকে পরিকল্পনা করতে হবে।