ভারতীয় শেয়ার মার্কেটে চরম অস্থিরতা। সোমবার আশা জাগিয়েও, মঙ্গলবার অপ্রত্যাশিতভাবে সেনসেক্স এবং নিফটি, দুই প্রধান সূচকই বড় ধরনের পতনের শিকার হয়েছে। যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা চলার পর হঠাৎ এমন বড়সড় পতন দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করে দিয়েছে, বুধবার থেকেই ভারতের আমদানির উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। এর ফলে ভারতীয় পণ্যের উপর মোট শুল্ক দাঁড়াল ৫০ শতাংশ।তার আগেই ধাক্কা শেয়ার বাজারে। মঙ্গলবার বাজার খোলার পরে ক্রমশ পতন দেখা গিয়েছে দুই সূচকে। এদিন সকাল ১০টা ৪৮ মিনিটে সেনসেক্স নেমে গিয়েছে ৬৫৮ পয়েন্ট, তবে ৮১০০০-এর উপরেই রয়েছে এই সূচক। অন্যদিকে, নিফটি ৫০ পড়েছে ১৯৮.৫৫ পয়েন্ট। যার জেরে নিফটি৫০-র সূচক দাঁড়িয়েছে ২৪৭৬৯ পয়েন্টে। জোর ধাক্কা লেগেছে ব্যাঙ্ক নিফটিতে, ওই একই সময়ে ৫৬৮ পয়েন্ট মতো পড়েছে এই সূচক। তবে পতনের মধ্যেও হিন্দুস্তান ইউনিলিভার এবং টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসের স্টকে সামান্য গতি দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, ভারতী এয়ারটেল, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, এসবিআই-এর স্টকে ধাক্কা লেগেছে। নিফটি ফার্মা, নিফটি হেল্থকেয়ার, নিফটি রিয়েলটিতে পতন দেখা গিয়েছে।শেয়ার বাজারে কেন পতন? ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই নতুন শুল্ক ২৭ আগস্ট অর্থাৎ বুধবার রাত ১২টা ০১ মিনিট থেকে কার্যকর হবে। যা বলেছিলেন, তাই করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনার প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপ নিয়েই ফেলল ট্রাম্প প্রশাসন।মার্কিন স্বরাষ্ট্র দফতরের অধীনস্থ কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি) এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারির পরেই পতন দেখা গিয়েছে দালাল স্ট্রিটে।ভারতে রাশিয়ার তেলের বাজার ধ্বংস করতেই যে ভারতের উপর বাড়তি শুল্ক চাপানো হয়েছে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন ট্রাম্পের ডেপুটি ডেজি ভান্স। তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার তেলের অর্থনীতি ধ্বংস করতেই ভারতের উপর ‘সেকেন্ডারি ট্যারিফ’-এর মতো অর্থনৈতিক কোপ হানা হয়েছে। যদিও জ্বালানি তেলের বানিজ্যে যে অন্য কারও চোখ রাঙানি চলবে না তাও বুঝিয়ে দিয়েছে ভারত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপাতত রত্ন, গয়না, বস্ত্রশিল্প-সহ বেশ কিছু সেক্টরে উদ্বেগের ছবি দেখা যাবে। মঙ্গলবার ট্রাম্প-ট্যারিফ নিয়ে পিএমও মিটিং রয়েছে, সেখানে কী সিদ্ধান্ত হবে তার উপর নজর রয়েছে বিনিয়োগকারীদের।