গত সোমবারের কথা। তাঁর বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছিল ইউক্রেন। দাবি ছিল, ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে ওই মারণ অস্ত্র ব্যবহার করেছেন তিনি। পরদিন, অর্থাৎ - মঙ্গলবারই সেই রুশ সেনা আধিকারিককে মস্কোয় খুন করা হল!আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, নিহত ওই সেনা আধিকারিক হলেন - লেফটেন্য়ান্ট জেনারেল ইগর কিরিলোভ। ৫৪ বছরের কিরিলোভকে মঙ্গলবার সকালে খুন করা হয় বলে দাবি করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যত জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে এই কিরিলোভই হলেন সবথেকে হাই-প্রোফাইল ব্যক্তি!তিনি রাশিয়ার পরমাণু, জৈব ও রাসায়নিক নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান ছিলেন। সূত্রের দাবি, মঙ্গলবার সকালে একটি আবাসনের ঠিক বাইরে তাঁর মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, একটি স্কুটারে বোমা লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে সেই বোমায় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তাতে কিরিলোভ ছাড়াও তাঁর সহকারীর প্রাণ গিয়েছে।সূত্রের দাবি, এই খুনের নেপথ্য়ে নাকি রয়েছে ইউক্রেনের এসবিইউ ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস। তারা নিজেরাই সেই হামলার দায় স্বীকার করেছে।রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ এই হামলা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, কিরিলোভের এই খুনের 'বদলা' নেওয়া হবে। শুধু সামরিকভাবে নয়, রাশিয়ার সরকার রাজনৈতিকভাবেও এর জবাব দেবে।অন্যদিকে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষেবা বা এসবিইউ-এর তরফে জানানো হয়েছে, তারাই ৫৪ বছরের লেফটেন্য়ান্ট জেনারেল ইগর কিরিলোভকে খুন করেছে। মস্কোয় একটি বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে সফলভাবে এই মিশন চালানো হয়েছে।রুশ সংবাদমাধ্যমের তরফেও এই খবরের সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে মঙ্গলবার সকালে যে বোমাটি ফাটানো হয়েছে, সেটি যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল।যে আবাসনের সামনে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে, সেটির বহু জানলা ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। এমনকী, বিস্ফোরণের প্রভাব এতটাই জোরদার ছিল যে ওই আবাসনের গা থেকে ইটের গাঁথনি খুলে বেরিয়ে এসেছে! সেই ছবি রুশ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশও করা হয়েছে।এসবিইউ-এর এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়েছে, 'কিরিলোভ একজন যুদ্ধ অপরাধী ছিলেন। এবং সেই কারণেই তাঁকে নিকেশ করা হয়েছে'। ইউক্রেনের ওই আধিকারিকের বক্তব্য, এই হত্যা আদতে ন্যায়সঙ্গত। কারণ, ওই রুশ সেনা আধিকারিক নিজেই যুদ্ধের নিয়ম মানছিলেন না।ওই আধিকারিকের আরও দাবি, গত সোমবারই কিরিলোভ ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন। প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র ইউক্রেন নয়। কিরিলোভকে আরও অনেক দেশই মোটে পছন্দ করত না। এমনকী, ব্রিটেন ও কানাডা-সহ একাধিক দেশ তাঁর উপর নিষেধাজ্ঞা পর্যন্ত জারি করেছিল।