বাবার গুলিতে টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবের মৃত্যুর ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা দেশে। ঘটনার পর থেকেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। এবার গুরুগ্রামে রাধিকা যাদব খুনের ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন তাঁর বান্ধবী তথা সহ-টেনিস খেলোয়াড় হিমাংশিকা সিং রাজপুত। আবেগঘন পোস্টে গোটা ঘটনার জন্য আঙুল তুললেন রাধিকার বাবা দীপকের দিকেই।
আরও পড়ুন-পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে ছাত্রকে বেধড়ক মারধর! বিতর্কে মধ্যপ্রদেশের জেলাশাসক
রাধিকার বন্ধু হিমাংশিকা সিং রাজপুত নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল থেকে দুটি ভিডিও পোস্ট করেন। আর সেই ভিডিওতেই রাধিকার পারিবারিক জীবন নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছেন তিনি।ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, 'আমার প্রিয় বন্ধু রাধিকাকে খুন করেছে ওর বাবা। পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায়, চারটে লাগে রাধিকার গায়ে। দীর্ঘদিন ধরেই ওর জীবনটা নরক করে তুলেছিল ওর বাবার দমনমূলক আচরণ। হিংসুটে লোকদের কথা শুনে শেষমেশ খুনের সিদ্ধান্ত নেয়।' রাধিকার পরিবার নাকি তাঁর ছোট জামাকাপড় পরা, নিজের মত চলাফেরা করা, কোনও কিছুই মেনে নিতে পারেনি। হিমাংশিকার কথায়, 'ও নিজের কেরিয়ারের জন্য প্রচুর খাটছিল, একটা অ্যাকাডেমিও গড়ে তুলছিল। কিন্তু ওর বাড়ির লোকের সহ্য হচ্ছিল না ওর স্বাধীনতা। ওদের খারাপ লাগত ও শর্টস পরেছে, কারও সঙ্গে কথা বলছে, নিজের মতো বাঁচছে দেখে।'
রাধিকার বন্ধু ভিডিও বার্তায় বলেন, 'আমরা ২০১২-১৩ সাল থেকে একসঙ্গে খেলছিলাম। আমি কখনও ওকে পরিবারের বাইরে কারোর সঙ্গে কথা বলতে দেখিনি। ও খুব চুপচাপ থাকত বাড়ির বাধ্যবাধকতার জন্য। প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য তাঁকে জবাবদিহি করতে হত। এমনকী ভিডিও কলেও কথা বলার সময় দেখাতে হত যে কার সঙ্গে কথা বলছে। বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে টেনিস অ্যাকাডেমি, তাও দেরি করতে পারত না। রাধিকা ছবি তুলতে, ভিডিও বানাতে ভালবাসত, কিন্তু পরিবারের চাপে সব বন্ধ করে দিয়েছিল।' এদিকে, রাধিকার মৃত্যুর পরে সামনে আসছিল ‘লাভ-জিহাদ’-এর তত্ত্বও। তবে সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে হিমাংশিকা জানান, 'যারা এই খুনকে লাভ জিহাদের রং দিচ্ছে, তাদের কাছে প্রমাণ কোথায়? রাধিকা এমনিতেই বেশি কারও সঙ্গে কথা বলত না। ওর জীবনটা ছিল বিচ্ছিন্ন, গৃহবন্দির মতো।'
আরও পড়ুন-পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে ছাত্রকে বেধড়ক মারধর! বিতর্কে মধ্যপ্রদেশের জেলাশাসক
অন্যদিকে পুলিশ জানিয়েছে, দীপক তার আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং তাদের অনুরোধ করেন যে মেয়েকে হত্যার জন্য তাকে 'মৃত্যুদণ্ড' দেওয়া হোক। জিজ্ঞাসাবাদের সময়, তিনি পুলিশকে বলেন যে রাধিকার আয়ের উপর নির্ভর করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করছেন এমন গুজবের কারণে তাকে 'অপমানিত' করা হয়।গ্রেফতারির পর রাধিকার বাবা দীপক যাদব খুনের কথা স্বীকার করেছেন। দীপকের দাদা বিজয় যাদব বলেন, 'ও বলেছে, ওর ফাঁসি হওয়া উচিত। নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। আমরাও স্তম্ভিত।'