রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপাল হলেন নামমাত্র প্রধান। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা আছে। বিচারব্যবস্থা ইস্যুতে উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে পাল্টা নিশানা করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বল। তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবি এবং রাজ্য সরকারের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, সেটার প্রেক্ষিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ধনখড়। এরপরেই শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে উপরাষ্ট্রপতিকে নিশানা করে সিব্বল।
আরও পড়ুন-শিকাগোর রাস্তায় এলোপাথাড়ি গুলি! ফের মার্কিন মুলুকে খুন ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবক
সিব্বল বলেন, 'জগদীপ ধনখড়ের বক্তব্য দেখে আমি দুঃখিত এবং হতবাক। তাঁর কোনও দলের পক্ষে কথা বলা উচিত নয়। আজকের সময়ে যদি সমগ্র দেশে কোনও প্রতিষ্ঠানের উপর আস্থা রাখা হয়, তাহলে তা হল বিচার ব্যবস্থা। যখন সরকারের কিছু লোক বিচার বিভাগের সিদ্ধান্ত পছন্দ করেন না, তখন তাঁরা বিচারবিভাগের সীমা অতিক্রম করার অভিযোগ তুলতে শুরু করেন। তাঁরা কি জানেব যে সংবিধানের ১৪২ ধারায় সুপ্রিম কোর্টকে পূর্ণ ন্যায়বিচার প্রদানের অধিকার দিয়েছে?'
তিনি আরও বলেন, 'রাষ্ট্রপতি কেবল নামমাত্র প্রধান। রাজ্যপালের পদটিও এরকম। রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিসভার পরামর্শ এবং সহযোগিতা নিয়ে কাজ করেন। রাষ্ট্রপতির নিজস্ব কোনও ব্যক্তিগত কর্তৃত্ব নেই। জগদীপ ধনখড়ের এটা জানা উচিত।'
কপিল সিব্বল আরও বলেন, 'এই ধরনের বক্তব্য বিচার বিভাগের অধিকারের উপর আক্রমণ।' এরপরেই তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, রাষ্ট্রপতি কি সংসদে পাস হওয়া বিল অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখতে পারেন? এভাবে কী করে কাজ হবে? সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত ২ জন বিচারকের হোক বা ৫ জন বিচারকের, সকলকে তা মেনে নিতে হবে। স্পিকার সংসদে শাসক এবং বিরোধী দলের মধ্যে বসেন ও নিরপেক্ষ থাকেন। কোনও দলের মুখপাত্রের মতো কাজ করতে পারেন না।'
আরও পড়ুন-শিকাগোর রাস্তায় এলোপাথাড়ি গুলি! ফের মার্কিন মুলুকে খুন ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবক
আসলে কয়েকদিন আগে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিলে সায় না দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল এবং রাজ্যের আইনসভায় পুনরায় পাশ হয়ে যাওয়ার পরেও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য যে রেখে দিয়েছিলেন, সেই কাজটা ‘অবৈধ এবং ভুল’।
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, সংবিধানের ২০০ ধারায় (বিলে অনুমোদন প্রদান সংক্রান্ত বিষয় ব্যাখ্যা করা হয়েছে) যা বলা হয়েছে, তাতে রাজ্যপালকে বাধ্যতামূলকভাবে মন্ত্রিপরিষদের সাহায্য এবং পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে হবে। সংবিধানে বিধিবদ্ধ তিনটি বিষয়ের মধ্যে যে কোনও একটি বিকল্প বেছে নিতে হয় তাঁকে - বিলে অনুমোদন দেওয়া, অনুমোদন না দেওয়া এবং রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য রেখে দেওয়া হয়। কিন্তু দ্বিতীয়বার যখন রাজ্যপালের কাছে বিল পেশ করা হচ্ছে, তখন সেটাকে রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য রেখে দেওয়ার সুযোগ নেই তাঁর কাছে।
বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ভারতীয় সংবিধানে সম্পূর্ণ ভেটো বা পকেট ভেটোর কোনও ধারণা নেই। বিলের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের সামনে তিনটি বিকল্প থাকে। কোনও বিল ফের বিধানসভায় পাশ করানোর পরে যদি রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়, তাহলে সেটা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য রেখে দেওয়ার সুযোগ নেই। একমাত্র সেটা হেরফের হতে পারে, যদি প্রথমবার যে বিল পাশ করানো হয়েছিল, সেটার থেকে আলাদা হয় দ্বিতীল বিল।