জঙ্গলের ভিতর শুয়ে রয়েছে ‘বনের রাজা’রা। মায়ের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রয়েছে তার শাবকেরা। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ডে-তে গুজরাটের গির জাতীয় উদ্যানে এমনই দৃশ্যের সাক্ষী থেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরপরেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এশিয়াটিক সিংহ-শুমারি সহ ৯টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিন দিনের গুজরাট সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এরমধ্যেই সিংহ সদন থেকে কয়েকজন মন্ত্রী এবং বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের সঙ্গে সোমবার সকাল হতেই জঙ্গল সাফারিতে রওনা দেন মোদী। জানা গিয়েছে, সাফারির পর গির বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের সদর দফতর সাসান গিরে জাতীয় বন্যপ্রাণী বোর্ডের সপ্তম বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মোদী।বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব-সহ অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও এদিন জুনাগড়ে ন্যাশনাল রেফারেল সেন্টার ওয়াইল্ড লাইফ-রও উদ্বোধন করেন। বৈঠক শেষ হওয়ার পর সাসানের মহিলা বনকর্মীর সঙ্গে আলোচনাও করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন -BSF Jawan: কিষাণগঞ্জের বিএসএফ ক্যাম্প থেকে রহস্যজনকভাবে জওয়ান নিখোঁজ! উদ্বিগ্ন পরিবার
বৈঠক শেষে ৯টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে বলেছে, চলতি বছরের মে মাস থেকেই দেশে হবে ১৬তম এশিয়াটিক সিংহদের গণনা। এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে উন্নত প্রযুক্তি, ট্র্যাকিং, পূর্বাভাসের জন্য গ্যাজেট দিয়ে দেবে। মানব-বন্যপ্রাণী সংঘাতের হটস্পটগুলিতে নজরদারি এবং অনুপ্রবেশ সনাক্তকরণ ব্যবস্থা নির্ধারণ করতে এগুলি সহায়তা করবে। প্রধানমন্ত্রী মোদী জঙ্গলে দাবানল এবং মানুষ-প্রাণী সংঘর্ষের মতো সমস্যা মোকাবেলায় রিমোট সেন্সিং এবং জিওস্পেশিয়াল ম্যাপিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষত অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকায় বনের দাবানল পর্যবেক্ষণ, সনাক্তকরণ, প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী মহাকাশ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতের ফরেস্ট সার্ভে, দেরাদুন এবং বিআইএসএজি-এন-এর মধ্যে সহযোগিতার পরামর্শ দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মোদী ঘোষণা করেছেন যে চিতা প্রবর্তন মধ্যপ্রদেশের গান্ধীসাগর অভয়ারণ্য এবং গুজরাটের বান্নি তৃণভূমি-সহ অন্যান্য অঞ্চলে সম্প্রসারিত করা হবে। তিনি বাঘ সংরক্ষণে একটি প্রকল্পও ঘোষণা করেছেন। এই উদ্যোগের লক্ষ্য স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহাবস্থান নিশ্চিত করা। পাশাপাশি দেশে কুমিরের সংখ্যা হ্রাসের কথাও স্বীকার করে এবং তার সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে নতুন প্রকল্প শুরু করার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও, তিনি একটি জাতীয় গ্রেট ইন্ডিয়ান বাস্টার্ড সংরক্ষণ পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
আরও পড়ুন -BSF Jawan: কিষাণগঞ্জের বিএসএফ ক্যাম্প থেকে রহস্যজনকভাবে জওয়ান নিখোঁজ! উদ্বিগ্ন পরিবার
পর্যালোচনা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বোর্ড এবং পরিবেশ মন্ত্রককে গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের তথ্য সংগ্রহ করতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছেন এবং ইন্ডিয়ান স্লথ বিয়ার, কুমির এবং গ্রেট ইন্ডিয়ান বাস্টার্ড সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন টাস্ক ফোর্স গঠনেরও নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সংরক্ষণে স্থানীয় সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রশংসা করেছেন।