ভারতের প্রাচীনতম আইআইটির শীর্ষপদে স্থায়ী ডিরেক্টর নিয়োগ হল। প্রায় ছ’মাস পর অবশেষে আইআইটি খড়গপুর পেল স্থায়ী অধিকর্তা। নতুন অধিকর্তা হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন সেখানকারই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষক সুমন চক্রবর্তী। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে এই নিয়োগের ঘোষণা করেন প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন অমিত জৈন। আগামী পাঁচ বছর এই দায়িত্বে থাকবেন অধ্যাপক সুমন।
আরও পড়ুন: IIT খড়গপুরের ছাত্রের মৃত্যুর আগে ভিডিয়ো কলে কথা, দিল্লির তরুণীকে তলব পুলিশের
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর অধ্যাপক বীরেন্দ্রকুমার তেওয়ারির মেয়াদ শেষ হয়। তারপর থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদটি খালি ছিল। সেই সময় খড়্গপুরে অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলেছেন আইআইটি (বিএইচইউ) বারাণসীর অধিকর্তা অধ্যাপক অমিত পাত্র। এবার স্থায়ী ডিরেক্টর হলেন সুমন চক্রবর্তী। জানা যাচ্ছে, সুমন বাবুর সঙ্গে খড়্গপুর আইআইটির সম্পর্ক দুই দশকেরও বেশি পুরনো। ২০০২ সালে তিনি সেখানে যোগ দেন অধ্যাপক হিসেবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এই বিজ্ঞানী ফ্লুইড মেকানিকস ও থার্মাল সায়েন্সে বিশেষজ্ঞ হলেও, তাঁর কাজ শুধুই গবেষণাগারে আটকে থাকেনি। বাস্তব জীবনের সমস্যার সমাধানে নানা উদ্ভাবন তাঁকে এনে দিয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
করোনাকালে ভাইরোলজিস্ট অরিন্দম মণ্ডলের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি করেছিলেন ‘কোভির্যাপ’, যা হল স্বল্পমূল্যের কোভিড পরীক্ষার কিট। রক্তাল্পতা নির্ণয়ে তাঁর তৈরি করা ‘হিমো অ্যাপ’, যাতে খরচ মাত্র ১ টাকা। এমনকী মহিলাদের জন্য বাড়িতে থেকে যোনিপথের সংক্রমণ পরীক্ষার প্রযুক্তিও উদ্ভাবন করেছেন তিনি।
কাজের জন্য অধ্যাপক সুমনের ঝুলিতে রয়েছে বহু সম্মান। ২০২৪ সালে তিনি এশিয়ার সেরা ১০০ বিজ্ঞানীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন। ইউনেসকো সমর্থিত ‘দ্য ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স’ তাঁকে বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত করেছে ২০২৪ সালের মার্চে। এছাড়াও রয়েছে ইনফোসিস প্রাইজ, শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতি প্রদত্ত ‘জাতীয় শিক্ষক সম্মান’ (২০২৩)। নতুন দায়িত্ব নিয়ে অধ্যাপক সুমন বলেছেন, ‘এত বড় প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে আসা শুধু সম্মানের নয়, দায়িত্বেরও ব্যাপার। আমরা চাই, খড়গপুর আইআইটি যেন বিশ্বমানের গবেষণা ও শিক্ষায় আরও এগিয়ে যায়।’ তাঁর নিয়োগের দিনেই প্রকাশ পেয়েছে ‘কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং ২০২৬’। সেই তালিকায় আইআইটি খড়্গপুর ২১৫ নম্বর স্থানে উঠে এসেছে। আগের বছরে ছিল ২২২ নম্বরে। দেশের মধ্যে এই আইআইটি রয়েছে চতুর্থ স্থানে।