রাষ্ট্রসংঘে গিয়ে বারংবার কাশ্মীর এবং ভারতীয় সংখ্যালঘুদের নিয়ে 'ন্যাকা কান্না' কাঁদে পাকিস্তান। তবে নিজেদের দেশেই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না তারা। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রেই প্রশাসনই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কাজ করে। এহেন পাকিস্তানের সেনা প্রধান এবার প্রকাশ্যেই 'হিন্দু বিরোধী' ভাষণ দিয়ে সমালোচনার ঝড় তুলে দিলেন। জেনারেল অসিম মুনিরের কথায়, 'আমরা (মুসলিমরা) হিন্দুদের থেকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আলাদা। সেটাই দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তি।'
পাক সেনা প্রধান বলেন, 'আনপাদের সন্তানদের এটা শেখাবেন যাতে তারা পাকিস্তানের ইতিহাস ভুলে না যায়। আমাদের পূর্বপুরুষরা ভাবতেন যে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা হিন্দুদের থেকে আলাদা। আমাদের ধর্ম আলাদা, আমাদের রীতিনীতি আলাদা... আমাদের ঐতিহ্য আলাদা, আমাদের চিন্তাভাবনা আলাদা, আমাদের লক্ষ্য আলাদা, এটাই ছিল দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তি। আমরা দুটি জাতি, আমরা এক জাতি নই। আমরা এই দেশ তৈরি করার জন্যে অনেক আত্মত্যাগ করেছি। এবং আমরা জানি কীভাবে পাকিস্তানকে রক্ষা করতে হবে। তাই নিজের পরবর্তী প্রজন্মকে পাকিস্তানের ইতিাস বলতে ভুলবেন না। যাতে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের নাড়ির টান বজায় থাকে। ইতিহাসে মাত্র দু'টি দেশ 'কালমা'র ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে। প্রথমটি হল - রিয়াসতে তৈবা। আজ যা মদিনা। আর দ্বিতীয়টি হল এই পাকিস্তান। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ, অর্থাৎ - আল্লাহ ছাড়া আর কোনও উপাস্য নেই এবং হজরত মহম্মদ আল্লাহর দূত।'
এর আগে গত মার্চ মাসেই রাইসিনা সংলাপে অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের 'ভুল' ধরেছিলেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তিনি বলেছিলেন, 'কাশ্মীরে দখলদারির বিষয়টিকে বিতর্ক বলে দাবি করা হচ্ছে।' এই নিয়ে আমেরিকা, ব্রিটেন সহ পশ্চিমা দেশগুলির উল্লেখ করেছিলেন জয়শংকর। জয়শংকর বলেছিলেন, 'দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে কাশ্মীরে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী অবৈধ উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি সময়ের জন্য অন্য কোনও দেশের ভূখণ্ড দখল করে রাখা হয়েছে। আমরা রাষ্ট্রসংঘে গিয়েছিলাম। যা ছিল দখলদারি, তা বিতর্কে পরিণত করা হয়েছে। তাহলে হামলাকারী ও নির্যাতিতকে সমানে সমানে দাঁড় করানো হল, দোষী পক্ষ কারা? ব্রিটেন, কানাডা, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।' এর আগেও রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তান কাশ্মীর এবং ভারতের সংখ্যালঘুদের নিয়ে মিথ্যাচার ছড়ানোয় কড়া জবাব পেয়েছিল ভারতের থেকে। আর এবার সরাসরি পাকিস্তানি সেনাপ্রধান হিন্দুদের থেকে মুসলিমদের 'আলাদা' আখ্যা দিয়ে সংখ্যালঘু বিরোধী মনোভাবের প্রচার করলেন সেই দেশে।