দেশের ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসে যে সুর বেঁধে দিয়েছিলেন, মঙ্গলবার ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে সেটাই আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিষয়টির সঙ্গে অবহিত তিন আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘উন্নত ভারত’-র ভিত্তিপ্রস্তর তৈরির ক্ষেত্রে তাঁর সরকার কী কী ভূমিকা পালন করেছে, তা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের দ্বিতীয় দফার শেষ স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে তুলে ধরতে পারেন। তাঁর শাসনকালে ভারত কীভাবে উন্নতির পথে এগিয়ে গিয়েছে, বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠেছে, তা বিশদে ব্যাখ্যা করতে পারেন। সেইসঙ্গে ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে কীভাবে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা যাবে এবং ‘অমৃত কাল’-এ কোন পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সেটার ব্লু-প্রিন্ট পেশ করতে পারেন মোদী।
আরও পড়ুন: Independence Day Gun Salute: দেশের তৈরি বন্দুকেই গান স্যালুট হবে লালকেল্লায়, স্বাধীনতা দিবসে বড় চমক
ওই আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আগামী ২৫ বছরে ভারত কোন পথে এগিয়ে যাবে, কোন নীতি অনুসরণ করবে, সে বিষয়ে বিস্তারিতভাবে মুখ খুলতে পারেন মোদী। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, আগামী বছর লোকসভা ভোটের আগে দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানোর এটাই সেরা সুযোগ। তাই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে তাঁর নিজের সরকারের রিপোর্ট কার্ড পেশ করতে পারেন মোদী। বিশেষত প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি (কৃষকদের জন্য), মহিলাদের ক্ষমতায়ন, আত্মনির্ভর ভারত, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উন্নতি, আয়ুষ্মান ভারত, জনধন অ্যাকাউন্ট, সরাসরি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে টাকা প্রদান (দুর্নীতির বিরুদ্ধে বার্তা), করোনাভাইরাস টিকার, প্রতিরক্ষা খাতে আত্মনির্ভরতা, বিশ্বের দরবারে ভারতের গুরুত্ব বৃদ্ধি, স্টার্ট-আপের মতো বিষয়গুলি উঠে আসতে পারে মোদীর ভাষণে।
আরও পড়ুন: Independence Day 2023: জাতীয় পতাকা তুলবেন? তাহলে কী কী করবেন আর কী কী করবেন না, সেটা আগে জেনে নিন
আর মঙ্গলবার সকালে লালকেল্লা থেকে সেই বিষয়গুলি নিয়ে যে মোদী মুখ খুলতে পারেন, সে বিষয়ে ইতিমধ্যে আভাসও মিলেছে। এক আধিকারিক বলেছেন, ‘গত নয় বছরে নিজের শাসনকালে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেগুলি রূপায়ণের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা করে গিয়েছেন। সেটার কারণেই শুধুমাত্র শতাব্দীর সবথেকে ভয়াবহ সংকট তথা করোনাভাইরাস মহামারীর মোকাবিলা করেনি ভারত, আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ১৩৫ মিলিয়ন মানুষকে দারিদ্র্যসীমা থেকে বের করে এনেছে।’ উল্লেখ্য নীতি আয়োগের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ভারতের দরিদ্র (শুধু টাকার ভিত্তিতে নয়; শিক্ষা, পুষ্টি-সহ জীবনের বিভিন্ন মাপকাঠির ভিত্তিতে) মানুষের সংখ্যা কমেছে ৯.৮৯ শতাংশ। ১৩.৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যসীমার আওতা থেকে বের করে আনা হয়েছে।
একইসুরে অপর এক আধিকারিক বলেছেন, 'শুধুমাত্র ঘোষণার খাতিরে কোনও প্রকল্পের ঘোষণা করে দেন না প্রধানমন্ত্রী মোদী। বরং তিনি দেশবাসীকে বাস্তবে সেই প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দিয়ে থাকেন (ডেলিভারির নীতি বিশ্বাস করেন প্রধানমন্ত্রী)। সেটাও ১০০ শতাংশ। সেজন্য লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের ভাষণের সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী (নির্মলা সীতারামন) হো গ্যায়া স্লোগান তুলেছিলেন।'
সেই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার লালকেল্লা থেকে মোদী নয়া কোনও প্রকল্পের ঘোষণা করবেন নাকি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রেখে নয়া কোনও সংকল্পের ঘোষণা করবেন, সে বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করতে চাননি ওই আধিকারিকরা। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ২০১৪ সাল থেকেই স্বাধীনতা দিবসে কোনও না কোনও একটি বড় ঘোষণা করেন বা বিশেষ কোনও বিষয়ের উপর জোর দেন মোদী। এবারও সেটা ব্যতিক্রম হবে না বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত।