কয়েকদিন আগেও ভারতকে নিয়ে ট্রাম্প কুকথা বলছিলেন। সেই সময় ট্রাম্পকে পুরোপুরি অগ্রাহ্য করছিলেন নরেন্দ্র মোদী। আর আজ যেন গলায় গলায় বন্ধুত্ব ট্রাম্প এবং মোদীর। গতকাল রাতে ভারতকে নিয়ে ইতিাচক বার্তা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এর জবাব দেন মোদী। আর মোদীর সেই জবাবের স্ক্রিনশট নিয়ে ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করেছেন ট্রাম্প। (আরও পড়ুন: রাজতন্ত্র ফিরছে নেপালে? নীরবেই বড় 'ইঙ্গিত' সেই দেশের সেনা প্রধানের?)
আরও পড়ুন: ডজনের বেশি বিরোধী MP-র ভোট গেছে NDA VP প্রার্থীর ঝুলিতে, 'সন্দেহ' কোন দলের দিকে?
ট্রাম্পের ইতিবাচক বার্তার জবাবে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব এবং স্বাভাবিক অংশীদারিত্বের উপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গতকাল ট্রাম্পের বাণিজ্য আলোচনা সংক্রান্ত পোস্টের জবাবে আজ মোদী বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্য আলোচনা ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্বের অপার সম্ভাবনা উন্মোচনের পথ প্রশস্ত করবে। প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাসে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে তিক্ততা বেড়েছিল। ট্রাম্প কুকথা বলেই চলেছিলেন। এদিকে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, মোদী নাকি ৪ বার ট্রাম্পের ফোন তোলেননি। এরই মাঝে মোদী আশা প্রকাশ করেন যে, ভারত-মার্কিন বাণিজ্য আলোচনা যত শীঘ্র চূড়ান্ত হবে, তত ভালো। উল্লেখ্য, ভারতের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে কড়া অবস্থান নিয়ে চলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে গতকাল হঠাৎ একটি বড় ইউ-টার্ন নিলেন তিনি। (আরও পড়ুন: DA মামলার শুনানি তো শেষ,২৫% মহার্ঘ ভাতা না মেটানোয় রাজ্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হবে?)
আরও পড়ুন : মুখে এক কথা, কাজে আরেক! ট্রাম্পের চাপে ভারতের ওপর ১০০% শুল্ক?
এর আগে ট্রুথ সোশ্যালে নিজের পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, 'আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা চলছে। আগামী সপ্তাহগুলিতে আমি আমার খুব ভালো বন্ধু প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে আলাপচারিতার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। আমি আশাবাদী যে দুই মহান দেশের মধ্যে এই আলোচনা সফল পরিণতিতে পৌঁছবে।' প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একজন মহান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প লেখেন, তিনি সব সময় তাঁর বন্ধু হয়ে থাকবেন। এর আগেও সম্প্রতি ভারত নিয়ে 'ইতিবাচক' বার্তা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। 'ভারতকে চিনের কাছে হারিয়েছি' বলার একদিন পরই তিনি বলেছিলেন, 'আমি মনে করি না ভারতকে আমরা হারিয়েছি'। উত্তরে প্রধানমন্ত্রী মোদী পোস্ট করে লিখেছিলেন, তিনি ট্রাম্পের ইতিবাচক মনোভাবের গভীর প্রশংসা করেন এবং তাঁকে পুরোপুরি সমর্থন করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ইতিবাচক ও দূরদর্শী সর্বাঙ্গীন আন্তর্জাতিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।
আরও পড়ুন: 'মার্কিন বন্ধু' কাতারে ইজরায়েলি হামলায় 'কান লাল' ট্রাম্পের, দায় ঝেড়ে বললেন...
সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ট্রাম্প ভারতের উপর তীব্র আক্রমণ শুরু করেছিলেন। তাঁর ক্যাবিনেট সদস্য থেকে উপদেষ্টাও তীব্র ভাষায় ভারতকে তোপ দেগেছিলেন এবং মিথ্যাচার করছিলেন। এই আবহে ট্রাম্পের গতকালকের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ, কখনও তিনি বলেছিলেন যে আমেরিকা চিনের কাছে ভারত ও রাশিয়াকে হারিয়েছে, আবার কখনও তিনি ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে 'একতরফা' বলে বর্ণনা করেছেন। এর আগে ট্রাম্প আরও দাবি করেছিলেন যে ভারত শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে, তবে প্রস্তাবটি খুব দেরিতে এসেছে বলে ইঙ্গিত করেছিলেন তিনি। বর্তমানে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের উপর ৫০% শুল্ক আরোপ করেছে। উভয় দেশের সাম্প্রতিক বিবৃতি অবশ্য ইঙ্গিত করছে যে দুই দেশই তাদের মতপার্থক্য নিরসন করতে এবং সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা চলছে।