ইউনুসের বাংসাদেশ থেকে কার্যত বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের নাম নিশানা মুছতে তৎপর বর্তমান সরকার। আর তারই অঙ্গ হিসাবে এবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নাম বাতিল করে গেজেট প্রকাশিত হল বাংলাদেশে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ এলাকায় সেতুর পশ্চিমপাড় এলাকা পরিদর্শনের সময় একথা জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, আমরা আশা করছি আগামী জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে এই সেতুর উদ্বোধন করা হবে।এনিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে।
প্রসঙ্গত ২০২০ সালের ২৯শে নভেম্বর বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যমুনা নদীর উপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নাম দিয়ে দেশের দীর্ঘতম ডুয়েল গেজ ডবল লাইনের এই সেতুর নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। এই সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে ৭২ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশানাল কো অপারেশন এজেন্সি।
তবে সেতু থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দিয়ে শেষ পর্যন্ত কী নাম দেওয়া হবে সেটা নিয়ে এখনও কিছু বলা হয়নি। তবে ওই প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে বর্তমানে বাংলাদেশে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছে তারা সাধারণত নির্দিষ্ট জায়গার নামেই সেখানকার কোনও ব্রিজ বা অন্য কোনও নির্মাণের নাম দিতে চায়। তবে বঙ্গবন্ধুর নাম বাদ দিয়ে কার নাম রাখা হবে বা কী নাম দেওয়া হবে তা নিয়ে কিছু জানা যায়নি।
তবে শুধু সেতুর নাম বদলাচ্ছে সেটাই নয়, বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যবই থেকেও মুজিবের নাম মোছার কাজ শুরু হয়েছে। মুজিবরের জীবনী, তাঁকে নিয়ে লেখা একটি পদ্য, তিনটি গদ্য সব বাদ যাচ্ছে। তৃতীয় শ্রেণির একটি বই থেকে মুজিবর রহমানের জীবনী বাদ যাচ্ছে। সেখান বাংলাদেশের জাতীয় স্তরের ৪ নেতার জীবনী যোগ করা হচ্ছে। মুজিবর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেলকে নিয়ে একটি ইংরেজি গদ্যও সেখানের পাঠ্যসূচিতে ছিল। তাও এখন বাদের পাতায়। বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বা এনসিটিবির সূত্রে একথা জানা গিয়েছে।
‘একুশে টিভি’র রিপোর্টে জানা গিয়েছে, প্রথম শ্রেণির বাংলা বই ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয়’ অধ্যায়ের নাম পাল্টে এখন হচ্ছে,' আমাদের মুক্তিযুদ্ধ'। সেই লেখায় প্রথমেই ছিল শেখ মুজিবর রহমানের ছবি। সেটি বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দৃশ্যের একটি ছবি দেওয়া হয়েছে। এই অধ্যায়টি মুজিবরের ৭ মার্চের ভাষণ দিয়ে শুরু হয়, সেটিকে ছেঁটে ফেলে এবার এই অধ্যায় ২৫ মার্চের ভাষণ দিয়ে শুরু করা হচ্ছে। ওই একই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে , দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠ্যবইতে থাকা শেখ মুজিবর রহমানের জীবনী নিয়ে লেখা ‘সোনার ছেলে’ লেখাটি বাদ যাচ্ছে। সেখানে আসছে কাজি নজরুল ইসলামের ওপর লেখা 'দুখু মিয়ার জীবন' লেখাটি। এছাড়াও ‘পহেলা বৈশাখ' শীর্ষক গদ্যের নাম পাল্টে রাখা হচ্ছে, ‘নববর্ষ’। মুজিবর রহমানকে নিয়ে লেখা ‘সেই সাহসী ছেলে’ ও বাদ যাচ্ছে। এছাড়াও নির্মলেন্দু গুণের লেখা 'মুজিব মানে মুক্তি' কবিতাটিও বাংলাদেশে প্রাথমিকের পাঠ্যসূচি থেকে বাদ যাচ্ছে। যোগ হচ্ছে ‘টুনুর কথা’ ও রজনীকান্ত সেনের কবিতা ‘স্বাধীনতার সুখ’।