মেয়ের মৃত্যু নিয়ে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ মৃত কংগ্রেস কর্মী হিমানী নারওয়ালের মায়ের। তিনি বললেন, 'আমি নিশ্চিত যে অভিযুক্ত কোনও পরিচিত ব্যক্তি, হয় দলের কেউ বা তার কলেজের কেউ বা আমাদের আত্মীয়। আমি নিশ্চিত যে কেউ তার সাথে কিছু করার চেষ্টা করেছিল, এবং সে প্রতিবাদ করেছিল, সেই কারণেই এমনটা ঘটেছে। আমার মেয়ে কোনও অন্যায় সহ্য করত না। আমি আসামির ফাঁসি চাই।' (আরও পড়ুন: রোহিত শর্মাকে ‘অপমান’ কংগ্রেস নেত্রীর, রাহুল গান্ধীকে টেনে তীব্র আক্রমণ বিজেপির)
আরও পড়ুন: বেহালাকাণ্ডে সামনে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট, জানা গেল স্বজনের হাড়হিম কাণ্ডের কথা
হিমানীর মা সবিতা অভিযোগ করেছেন, অল্প সময়ের মধ্যে মেয়ের রাজনৈতিক উত্থান দেখে ঈর্ষা করত দলেরই কিছু নেতা। সবিতা বলেন, তাঁর মেয়ে গভীর রাত পর্যন্ত দলের জন্য কাজ করতেন এবং এর জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি বলেন, 'গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মেয়ের সঙ্গে শেষবার আমার কথা হয়। পরের দিন ও দলের একটি কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু পর থেকেই ওর ফোন বন্ধ পাই। যতদিন না আমার মেয়ে ন্যায়বিচার না পাচ্ছে, ততদিন আমরা তাকে দাহ করব না।' উল্লেখ্য, রোহতক-দিল্লি হাইওয়ের সাম্পলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি সুটকেস থেকে উদ্ধার হয়েছিল হিমানীর দেহ। এর আগে তিনি হরিয়ানায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন এবং রোহতকের সাংসদ দীপেন্দর হুডার সঙ্গেও নানা অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখা গিয়েছে সাম্প্রতিককালে। কংগ্রেসের বিভিন্ন সমাবেশ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে হরিয়ানভি লোকশিল্পীদের সঙ্গে পারফর্ম করতেও দেখা যেত হিমানীকে। (আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আপডেট, ডিএ নিয়ে 'ধরা পড়ল' প্যাটার্ন)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে এবার কোটা বিরোধীরাই কোটার সুবিধা ভোগ করবেন!
এদিকে হিমানী নারওয়াল খুনের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করল হরিয়ানা পুলিশ। ২৩ বছর বয়সি কংগ্রেস কর্মীর হত্যার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছিল হরিয়ানা পুলিশ। এক পুলিশ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, রোহতক পুলিশের চারটি দল দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে। এদিকে হিমানীর হারিয়ে যাওয়া ফোনও উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এই তদন্তে সাইবার ও ফরেনসিক দলের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। সাম্পলা ডিএসপি রজনীশ কুমার জানিয়েছেন, কী কারণে হিমানীকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে, তা নিয়ে বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, সাম্পলা বাসস্ট্যান্ড থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে পরিত্যক্ত স্যুটকেসটি লক্ষ্য করেন বেশ কয়েকজন যাত্রী। তখন বিষয়টি জানানো হয় পুলিশকে। রোহতক পুলিশের মুখপাত্র সানি লৌরা বলেন, সুটকেস খোলার পর কর্মকর্তারা হিমানী নারওয়ালের দেহটি দেখতে পান। তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট ছিল। যা থেকে বোঝা যায় যে তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। (আরও পড়ুন: উচ্চমাধ্যমিকের আগে পরীক্ষাকেন্দ্রে TMC নেতার জন্মদিন পালনের অভিযোগ, তোপ সুকান্তর)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলায় 'ধর্মনিরেপক্ষ' ইউনুসের ঘাড়ে দায় চাপালেন অমর্ত্য সেন
এদিকে হিমানী নারওয়ালের হত্যাকাণ্ডে শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা এই ঘটনার নিন্দা করে বলেছেন, এই ঘটনা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার কলঙ্ক। উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে অপরাধীদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করতে হবে। মহিলাদের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ রাজ্যগুলির মধ্যে একটি হল হরিয়ানা। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সামাজিক অগ্রগতি সূচকেও তার প্রতিফলন ঘটে। তিনি আরও দাবি করেছেন যে হরিয়ানায় প্রতিদিন তিন থেকে চারটি খুন, একাধিক ধর্ষণ, অপহরণ এবং ১০০টিরও বেশি চুরির ঘটনা ঘটে।