বাড়ি গিয়ে গিয়ে বিক্রি বন্ধ! এমনই বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল Byju's । সংস্থার সেলস প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে গত কয়েক মাস ধরেই অভিযোগ উঠেছে। অনেকেরই দাবি চাপ দিয়ে, মিথ্যা কথা বলে হাজার হাজার টাকার বাইজুস কোর্স বিক্রি করা হয়েছে। সরকারি সংগঠনের নজরেও এসেছে দেশের সবচেয়ে বেশি ভ্যালুয়েশনের এড-টেক সংস্থা। এরপরেই এই ঘোষণা।
গত বছর একাধিক সংবাদ প্রতিবেদনে বাইজুস-এর জোর করে কোর্স বিক্রির অভ্যাসের বিষয়টি উঠে আসে। ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস (NCPCR) বাইজুস-এর কর্ম সংস্কৃতি এবং গ্রাহক পরিষেবার বিষয়ে জানতে পারে। সংস্থার প্রধান বাইজু রবীন্দ্রনকে সমন করে NCPCR। এরপর সংস্থা জানায়, মাসে ২৫ হাজার টাকার কম আয় করা অভিভাবকদের শিশুদের কোর্স বেচবে না Byju's (ক্লিক করুন)।
এতদিন যা হত
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, কোন্নগরের এক প্রাক্তন বাইজু সেলসকর্মী জানান, কোর্স বিক্রির মূলেই ছিল বাড়ি বাড়ি প্রতিনিধি পাঠানো। প্রথমে স্কুল থেকে বা অন্য মাধ্যমে সম্ভাব্য পড়ুয়াদের নাম-ফোন নম্বর সংগ্রহ করা হত। সেটা দেখে ফোন করতেন বাইজুস-এর সেলস কর্মীরা। বহু ফোন কল করার পর অনুনয়-বিনয় করে বাড়ি গিয়ে 'ডেমো' দেখাবেন বলে অভিভাবকদের রাজি করাতেন।
এরপর সপ্তাহান্তে সেই পড়ুয়ার বাড়ি চলে যেতেন বাইজুস-এর কর্মী। সেখানে রীতিমতো অভিভাবক ও পড়ুয়াদের 'ভয়' দেখিয়ে, মনগড়া গল্প বলে যেন-তেন প্রকারে কোর্স বিক্রি করা হত। চাকরি বাঁচাতে ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বকুনি থেকে বাঁচতে যেকোনও উপায়ে কোর্স বিক্রি করতেন ওই কর্মীরা।
বাইজুস-এর অনলাইন কোর্সের দাম নেহাত্ সস্তা নয়। যে কোনও মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে ৪০-৫০ হাজার টাকার অনলাইন কোর্স কেনা ভয়ের বিষয়। এদিকে অভিযোগ, পরীক্ষায় পড়ুয়ার খারাপ ফলের আশঙ্কা ঢুকিয়ে দেওয়া হত অভিভাবকদের মনে। রীতিমতো চাপ দিয়ে, বারবার যোগাযোগ করে কোর্স বিক্রি করা হত।
অনেকক্ষেত্রে কোর্স কেনার পর অনেকের তা পছন্দ হত না। সেক্ষেত্রে রিফান্ড নিতে গেলে আর ফোনই ধরেন না বহু বাইজুস সেলস কর্মী।
এবার যা হবে
এখন থেকে সম্পূর্ণই টেলিকলিংয়ের মাধ্যমে কোর্স বিক্রি করার চেষ্টা করতে হবে বাইজুসকে। সংস্থা নিজেই ১৬ তারিখে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সেই বিষয়ে জানিয়েছে। তারা এই কথাও নিশ্চিত করেছে যে, এবার থেকে সেলস-এর উপর আরও কড়া নজরদারি রাখা হবে। আরও পড়ুন: জার্সি স্পনসর চুক্তি থেকে বেরিয়ে যেতে চায় বাইজুস, স্টার চায় ১৩০ কোটির ছাড়