দেবব্রত মোহান্তি
সবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হয়েছে। মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এই মন্দিরের উদ্বোধন করেছিলেন। এসবের মধ্য়েই এবার নয়া বিতর্ক। অভিযোগ উঠেছে পুরীর মন্দিরের বাড়তি নিমকাঠ ব্যবহার করে দিঘার মন্দিরের জগন্নাথ মন্দিরে মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। এনিয়ে এবার শুক্রবার ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের প্রশাসনিক প্রধান অরবিন্দ পাধিকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে ২০১৫ সালে নবকলেবর অনুষ্ঠানে যে বাড়তি নিম কাঠ বেঁচেছিল সেটা দিঘার মন্দিরে মূর্তি তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল কি না সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে। এবার তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ।
নবকলেবর অনুষ্ঠান। এই রীতির মাধ্যমে জগন্নাথদেব, বলভদ্র ও সুভদ্রার মূর্তিকে পবিত্র নিম কাঠ দিয়ে নতুন করে তৈরি করা হয়।
ওড়িশার আইনমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন সত্যিটা আসলে কী সেটা জানার জন্য় এই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্য়মে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ পুরীর মন্দিরের মূর্তির পবিত্রতা যাতে রক্ষিত থাকে তার উপর বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
ওয়েস্টবেঙ্গল হিডকো এই মন্দির নির্মাণ করেছেন। প্রায় ২১৩ ফুট উচ্চতা। পুরীর মন্দিরের উচ্চতা ২১৪ ফুট। তার প্রায় কাছাকাছি। আসলে রামকৃষ্ণ দশমহাপাত্র, পুরীর এক দৈতাপতি উপস্থিত ছিলেন দিঘাতে। বাংলার মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে, তিনি বলে ফেলেছেন তিনি ২০১৫ সালের নবকলেবরের বাড়তি নিমকাঠ দিঘার মন্দিরের মূর্তি তৈরির জন্য আনা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেছিলেন বলে রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে বাড়তি কিছু পবিত্র কাঠ ছিল। তবে পুরীতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে তিনি একথা আবার অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, পরিকল্পিতভাবে বিকৃত করে খবর করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন দিঘার যে মূর্তি সেটা সাধারণ নিম কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে পুরীর বাড়তি কাঠ দিয়ে দিঘার মূর্তি তৈরির খবর ছড়িয়ে পড়তেই পুরীর সেবাইতরা অনেকেই বেশ ক্ষুব্ধ। তাঁদের একাংশের মতে. পুরীর নিজস্ব যে পরিচিতি রয়েছে সেখানে আঘাত লেগেছে। অনেকেই দিঘার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চাননি। কিন্তু ওই দৈতাপতি কীভাবে পুরীর বাড়তি কাঠ পেলেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এনিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
সেই সঙ্গেই দিঘার মন্দিরকে জগন্নাথ ধাম বলার পরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্যান্ড আর্টিস্ট সুদর্শন পট্টনায়ক। তিনি মুখ্য়মন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে লিখেছেন পৃথিবীতে একটাই জগন্নাথধাম। সেটা পুরীতে। এবার অন্য় কোনও মন্দিরকে এটা বলা হলে বিভ্রান্তি তৈরি হবে।