কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর উত্তরাখণ্ডের চার ধাম যাত্রার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমগ্র যাত্রাপথকে ১৫টি সুপার জোন, ৪১টি জোন এবং ১৩৭টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, পহেলগাঁওয়ের হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর জেরেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
উত্তরাখণ্ড সরকার চার ধাম যাত্রায় আধাসামরিক বাহিনীর আটটি কোম্পানি মোতায়েন করেছে। চার ধাম যাত্রায় এই ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম নেওয়া হল। উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল (২০২৫) যমুনোত্রী ও গঙ্গোত্রী মন্দির খোলার সঙ্গে সঙ্গেই চার ধাম যাত্রা শুরু হয়ে গিয়েছে।
উত্তরাখণ্ড পুলিশের মুখপাত্র তথা ডিজি নীলেশ আনন্দ ভরণে জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার চার ধাম যাত্রায় মোতায়েনের জন্য আট কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি লিখেছিল। তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য এই আট কোম্পানি আধাসেনাকে তীর্থস্থান এবং চার ধাম যাত্রাপথে মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে কখনও নিরাপত্তার এমন বন্দোবস্ত করা হয়নি বলেই দাবি সূত্রের।
রাজ্যের উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামালর জেরেই চার ধাম যাত্রার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। আধাসামরিক বাহিনী ছাড়ও প্রায় ৬,০০০ পুলিশকর্মী এবং প্রাদেশিক সশস্ত্র বাহিনী (প্যাক)-এর ১৭টি কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ)-এর প্রশিক্ষিতদের ৬৫টিরও বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। চারটি তীর্থস্থান এবং সমগ্র যাত্রাপথে প্রায় ২,০০০ সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারি চালানো হবে।
উল্লেখ্য, যমুনোত্রী ও গঙ্গোত্রী মন্দির খোলার সঙ্গে সঙ্গেই গত ৩০ এপ্রিল থেকে চার ধাম যাত্রা শুরু হয়ে গিয়েছে। কেদারনাথ ধামের দরজা গত শুক্রবার খোলা হয়েছে। বদ্রীনাথ মন্দির খোলা হবে আগামী ৪ মে। গত বছর ১০ মে মন্দিরের দরজা খোলার পর থেকে প্রায় ৪৮ লক্ষ তীর্থযাত্রী চার ধাম এবং হেমকুণ্ড সাহিব দর্শন করতে এসেছিলেন।
গত মাসে হিন্দুস্তান টাইমস চার ধামের অন্তর্গত তীর্থস্থানগুলির ধারণক্ষমতা (কত যাত্রী একসঙ্গে বা একদিনে যেতে আসতে পারেন) নিয়ে আইআইএম রোহতকের প্রতিবেদনগুলি উদ্ধৃত করে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছিল। আইআইএম রোহতকের প্রতিবেদন গত বছরের জুলাই মাসে রাজ্য সরকারকে জমা দেওয়া হয়েছিল। এটি তথ্য জানার অধিকার (আরটিআই) আইনের মাধ্যমে হিন্দুস্তান টাইমস হাতে পেয়েছিল।
তাতে বলা হয়েছে, চারটি তীর্থস্থানের মধ্যে সবথেকে বেশি জনসমগম ঘটে যে কেদারনাথে, সেই তীর্থস্থানে প্রতিদিন মাত্র ১৭,৮৯৪ জন তীর্থযাত্রী আসতে পারেন। বদ্রীনাথ ধামে প্রতিদিন আসতে পারেন ১৫,০৮৮ জন। গঙ্গোত্রীতে দৈনিক ৯,০১৬ জন এবং যমুনোত্রীতে প্রত্যেক দিন ৭,৮৭১ জন তীর্থযাত্রী আসতে পারেন।