সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে বহুচর্চিত ধর্মান্তর চক্রের মূল অভিযুক্ত জামালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবাকে গ্রেফতার করা হয়। আর্থিক সহায়তার আশ্বাস বা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে, অথবা ভয় দেখিয়ে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হতো। টার্গেট করা হতো অসহায় শ্রমিক, তথাকথিত সমাজের নিচু শ্রেণির এবং বিধবা মহিলাদের। এবার ৬ রাজ্য থেকে এই গ্যাংয়ের ১০ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। আর সেই অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ভুল স্বীকার করে ফের হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার অবৈধ ধর্মান্তর, মৌলবাদ প্রচার, লাভ জিহাদ বন্ধ করতে মিশন অস্মিতা অভিযান শুরু করেছে। গত মার্চ মাসে আগ্রায় একই পরিবারের দুই তরুণীর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়। সেই ঘটনার তদন্তে নেমেই এই চক্রের অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়। এই অভিযানে উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে সহায়তা করে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) এবং সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস) টিমও।
আগ্রার পুলিশ কমিশনার দীপক কুমার জানিয়েছেন, মহিলা-সহ ধৃত ১০ জনের মধ্যে রাজস্থান থেকে তিনজন, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে দু’জন এবং দিল্লি, উত্তরাখণ্ড এবং গোয়া থেকে একজন করে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই চক্রের সদস্যরা মূল ‘লাভ জিহাদ’-এর মাধ্যমেই কম বয়সের মহিলাদের টার্গেট করে ধর্মান্তর করার চেষ্টা চালাত।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা থেকে এই গোষ্ঠীকে আর্থিক সহায়তা করা হতো বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।দীপক কুমার বলেন, ‘অবৈধভাবে ধর্মান্তর ও মৌলবাদের সঙ্গে জড়িত এই চক্রের কার্যপদ্ধতির সঙ্গে আইসিএসের মিল রয়েছে। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা থেকে এদের অর্থ সাহায্য করার সূত্রও পেয়েছি। ধৃতেরা মূলত অবৈধ তহবিল গ্রহণ, আশ্রয় প্রদান, আইনি পরামর্শ প্রদান এবং ধর্মান্তর ও মৌলবাদী প্রক্রিয়ায় সহায়তা করার মতো নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ভূমিকা পালন করত।’
আরও পড়ুন-'আইএসএস-এ ভারতের পতাকা...,' বাদল অধিবেশনকে 'বিজয়োৎসব' ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
এই অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন রাজস্থানের বাসিন্দা মহম্মদ আলিও।ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে তাঁর নাম ছিল পীযূষ পানওয়ার। তিনি পুলিশকে ধর্মান্তরিত করার নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানিয়েছেন।আলি আরও বলেন, তিনি ইসলাম ত্যাগ করে ফের হিন্দু হতে চান। পীযূষ পানওয়ারের মহম্মদ আলি হওয়ার গল্প শুরু হয় ২০২১ সালে। সেই সময় তার প্রথম দেখা হয় রাজস্থানের টঙ্কের মহিলা সানার সঙ্গে। সূত্রের খবর,প্রথম সাক্ষাতের পরেই তারা একে অপরকে প্রেমে পড়ে যায় এবং বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়।কিন্তু সানা শর্ত দিয়েছিল যে, পীযূষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেই তবে তিনি বিয়ে করবেন। শেষ পর্যন্ত সানার শর্তে রাজি হয়ে যায় পীযূষ।এরপরেই নিজের নাম পরিবর্তন করে মহম্মদ আলি রাখেন পীযূষ।কিন্তু ধর্মান্তরিত হওয়ার পর সানা তাকে প্রত্যাখ্যান করে।এরপর আলি উত্তরপ্রদেশের বরেলির এক মুসলিম তরুণীকে বিয়ে করেন।
আরও পড়ুন-'আইএসএস-এ ভারতের পতাকা...,' বাদল অধিবেশনকে 'বিজয়োৎসব' ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সময় আলি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন পিএফআই-র সদস্য মহম্মদ গাউসের সংস্পর্শে আসেন।গাউসের মাধ্যমে আলি দিল্লিতে ধর্মগুরু কলিম সিদ্দিকীর সঙ্গে দেখা করেন। গত বছর কলিম একটি পৃথক ধর্মান্তর মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।এরপর আলি ধর্মীয় শিক্ষার জন্য পশ্চিমবঙ্গে যান। তিনি আসানসোল, বর্ধমান এবং কাটোয়া পাড়ার মাদ্রাসাগুলিতে তিন মাস ছিলেন।প্রায় এক বছর আগে ইনস্টাগ্রামে গোয়ার আয়েশা নামে এক মহিলার সংস্পর্শে আসেন তিনি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ যে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে, তাদের মধ্যে আয়েশাও ছিল।