কলকাতা: যমজ সন্তান হওয়ার সময় গর্ভে দুটি ভ্রুণ থাকে। কিন্তু কখনও কখনও কিছু ব্যতিক্রমী ঘটনাও দেখা যায়। যেমন একটি ভ্রুণের পেটে আরেকটি ভ্রুণ বেড়ে ওঠে। এই ঘটনাকে ফিটাস-ইন-ফিটো বলে। এর থেকেও বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা। সম্প্রতি এনআরএসে (NRS Hospital) এক রোগিনী ভর্তি হন। যার গর্ভস্থ শিশুর পেটে দুটি ভ্রুণ ছিল। ফিটাস-ইন-ফিটোর ঘটনাগুলির মধ্যে যা আরও বিরল। তবে এখনও অবাক হওয়া বাকি রয়েছে। মাত্র ১৮ দিনের নবজাতকের পেটে দুটি ভ্রুণ থাকা মানে তাঁর প্রাণসংশয় হতে পারে। চিকিৎসকদের হাতযশে এবার তা এড়ানো গিয়েছে। এনআরএস-এর পেডিয়াট্রিক বিভাগের জুনিয়র ডাক্তাররাও ছিলেন এই অস্ত্রোপচারের নেপথ্যে।
বিরলের মধ্যে বিরলতম কেন?
পরিসংখ্যান বলছে, ভ্রুণের পেটে ভ্রুণ ৫০ লক্ষ গর্ভধারণের মধ্যে একটির ক্ষেত্রে দেখা যায়। ফিটাস-ইন-ফিটোর ঘটনা সারা বিশ্বের চিকিৎসাশাস্ত্র কমবেশি ২০০০টি নথিভুক্ত হয়েছে আজ পর্যন্ত। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে ভ্রুণের পেটে দুটো ভ্রুণ থাকার ঘটনা আরও বিরল বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে এই বিরল সমস্যার সম্মুখীন হলেও পিছপা হননি চিকিৎসকরা। পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের দক্ষতায় সুস্থ হয়ে ওঠে শিশুটি। শিশুটির অস্ত্রোপচারে জুনিয়র চিকিৎসকদের ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য ছিল।
আরও পড়ুন - বিরল রোগের শিকার দেশের প্রধান বিচারপতির দুই কন্যা, কেন হয়? কী কী লক্ষণ
কী বলছেন চিকিৎসক?
সংবাদমাধ্যম এই সময়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, পেডিয়াট্রিক সার্জেন কৌশিক সাহা ছিলেন এই অস্ত্রোপচারের নেতৃত্বে। তাঁর অধীনে শিশু-শল্য বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিংলাজ সাহা, জুনিয়র কনসাল্ট্যান্ট তনুশ্রী কুণ্ডু এবং অ্যানাস্থেটিস্ট মৌসুমি খাঁড়ার সহযোগিতায় গোটা অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
কঠিন চ্যালেঞ্জ হলেও মিলেছে সাফল্য
চিকিৎসক কৌশিক সাহা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কিছু কিছু সময় প্রকৃতির বেনিয়ম ঘটে যায়। যার ফলে একটি ভ্রুণ আরেকটি ভ্রণের পেটে ঢুকে যায়। তবে এই ক্ষেত্রে ঘটনাটি বিরলের মধ্যে বিরল। কারণ ভ্রুণের পেটে একটি নয়, দুটি ভ্রুণ ছিল। আবার তাদের হাত পায়ের আঙুলও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। ফলে চিকিৎসকদের কাছে চ্যালেঞ্জটা ছিল তুলনায় অনেকটা কঠিন। তবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জে সাফল্যই পেয়েছে চিকিৎসক দল।