যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যাচ্ছে মাতৃত্বের ধারণা। এখন অনেক মহিলাই ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সলে মাতৃত্বকে গ্রহণ করছেন। এই প্রবণতা এখন 'মিডলাইফ মাদারহুড' বা 'মধ্যজীবনের মাতৃত্ব' নামে পরিচিত। এই বিবর্তনশীল ধারাটি আধুনিক নারীর জীবনের এক ব্যাপক পরিবর্তনকে তুলে ধরে।
গর্ভধারণ আরও চ্যালেঞ্জিং
তবে, মধ্য বয়সে সন্তানধারণ মোটেই জটিলতামুক্ত নয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে প্রাকৃতিকভাবে একজনের গর্ভধারণ ক্ষমতা কমতে শুরু করে। যা গর্ভধারণকে আরও চ্যালেঞ্জিং করে তোলে। অনেক মধ্যজীবনের মায়েরা আইভিএফ (IVF), ডিম্বাণু দান বা সারোগেসির মতো সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তির আশ্রয় নিচ্ছেন। এই চিকিৎসাগুলি আশা জাগালেও, সেগুলোর নিজস্ব শারীরিক, মানসিক এবং আর্থিক চাপ রয়েছে।
কী বলছেন চিকিৎসক
আভা সার্জি সেন্টারের চিকিৎসক বাণীকুমার মিত্রের কথায়, ‘চ্যালেঞ্জের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তোলে কর্মজীবন এবং ঘন ঘন চিকিৎসার রুটিনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা। ঘন ঘন ক্লিনিকে যাওয়া, হরমোন থেরাপি এবং গর্ভধারণের চিকিৎসার অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।’
বেশি বয়সে গর্ভধারণের ঝুঁকি
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গর্ভধারণের সঙ্গে সম্পর্কিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়তে থাকে। মধ্যজীবনের গর্ভাবস্থায় গর্ভকালীন ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, প্রি-এক্লাম্পসিয়া এবং ক্রোমোজোম অস্বাভাবিকতার মতো জটিলতার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই চিকিৎসা সংক্রান্ত উদ্বেগগুলির জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণ, সময়মতো হস্তক্ষেপ এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সুষম পুষ্টি ও শক্তিশালী মানসিক সুস্থতার উপর নির্ভরশীল জীবনযাত্রার প্রয়োজন হয়।
রয়েছে বিকল্প পথ
তবে, চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, জীবনের পরবর্তী পর্যায়ে মাতৃত্ব বেছে নেওয়া কোনো আপস নয়; এটি একটি সচেতন এবং গভীরভাবে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। অনেক মহিলা যারা ৪০ বছরেবয়সে মাতৃত্ব গ্রহণ করেন, তারা এটিকে তাদের জীবনের অন্যতম ফলপ্রসূ অভিজ্ঞতা হিসাবে বর্ণনা করেন। তারা প্রায়শই নিজেদেরকে মানসিকভাবে আরও প্রস্তুত, আর্থিকভাবে স্থিতিশীল এবং সন্তানদের লালন-পালনের জন্য মানসিকভাবে আরও সজ্জিত মনে করেন, যা বয়স এবং মাতৃত্ব সম্পর্কে পুরোনো ধারণাগুলিকে চ্যালেঞ্জ করে।