জন্ম ১৮৭৮ সালের ২ আগস্ট অন্ধ্র প্রদেশের ভাটলাপেনুমারুতে। পরিবার সূত্রে পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া তেলুগু ব্রাহ্মণ হলেও মাত্র ১৯ বছর বয়সে যোগ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে। দক্ষিণ আফ্রিকায় বোয়ের যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন। আর তখনই হঠাৎ করে ভারতের জাতীয় পতাকা নির্মাণের কথা মাথায় আসে তাঁর।
কীভাবে মাথায় এল?
বাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর পিঙ্গালি লক্ষ করেছিলেন, সেনায় কর্মরত ভারতীয়দের স্যালুট করতে হয় ব্রিটিশ ইউনিয়ন জ্যাককে। তখনই হঠাৎ মাথায় আসে ভারতের একটি নিজস্ব পতাকা নির্মাণের কথা।
গান্ধীজির সঙ্গে আলাপ
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ আফ্রিকাতে থাকাকালীন মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। এর পর তিনি ১৯০৬ সালে কলকাতায় কংগ্রেসের অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানেই ভারতের পতাকা তৈরির কথা বলেছিলেন পিঙ্গালি। এর পর মোট ২৫টি নকশা তৈরি করেছিলেন তিনি। গান্ধীজি অবশ্য তাঁকে একটাই নকশা জমা দিতে বলেন। গান্ধীজির কথা অনুযায়ী তিনি একটি নকশা তৈরি করেন। সেখানে ছিল লাল ও সবুজ রং দুটি। কিন্তু সাদা ছিল না। শান্তির প্রতীক হিসেবে এই সাদা রঙকে যুক্ত করতে বলেন গান্ধীজি। এর পর সেটি যোগ করে তৈরি হয় কংগ্রেসের একটি পতাকা।
প্রথমে ছিল না অশোক চক্র
প্রথমদিকে ওই পতাকায় অশোকচক্র ছিল না। ছিল একটা চরকার প্রতীক। যা মহাত্মার গান্ধীর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। এই পতাকাই বিভিন্ন কংগ্রেসের বৈঠকে ব্যবহার করা হত। স্বাধীনতার ঠিক আগে ২২ জুলাই এই বিশেষ পতাকাকে গ্রহণ করা হয় ভারতের জাতীয় পতাকা হিসেবে।
জাতীয় পতাকার স্বীকৃতি
কিন্তু কিছুদিন পর স্বাধীনতা পাওয়ার পর জাতীয় পতাকা এই পতাকাটি হয়নি। এর মধ্যে কিছু বদল আনা হয়। চরকার বদলে আসে অশোক স্তম্ভ। লালের বদলে আসে গেরুয়া। শেষমেশ পিঙ্গালার এই পতাকায় ভারতের জাতীয় পতাকা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ১৯৬৩ সালে প্রয়াত হন পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া। প্রথম জীবনে ব্রিটিশ আর্মিতে থাকলেও পরে দেশের জন্য প্রাণপাত করেছেন পিঙ্গালা। আজীবন মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জীবন কাটিয়েছেন। তাঁর প্রয়াণের পর ২০১৪ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো বিজয়োয়াড়া কেন্দ্রটি তাঁর নামে নামাঙ্কিত করে।