তাপ কেবল শারীরিক ক্লান্তি বা ঘামই আনে না, বরং এটি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও গভীর প্রভাব ফেলে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং তাপপ্রবাহের কারণে, মন এবং শরীরের অবস্থাও বিপর্যস্ত হতে শুরু করে। সময়মতো সতর্কতা অবলম্বন করে এবং সঠিক জীবনধারা অবলম্বন করে, আমরা আমাদের শরীর এবং মন উভয়কেই নিরাপদ রাখতে পারি। আসুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে।
শরীরের উপর তাপপ্রবাহের প্রভাব
- জলের অভাব: শরীরে জলের পরিমাণ দ্রুত হ্রাস পেতে শুরু করে, যার ফলে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা এবং ক্লান্তি দেখা দেয়।
- হিট স্ট্রোক: যখন শরীর খুব বেশি গরম হয়ে যায় এবং আপনি ঘামতে পারেন না, তখন এটি একটি জীবন-হুমকির অবস্থা হতে পারে।
- ডায়রিয়া এবং পেটের রোগ: তাপ এবং আর্দ্রতায় ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পায়, যা ডায়রিয়া, খাদ্যে বিষক্রিয়া এবং বমির মতো সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
- ত্বকের সমস্যা: অতিরিক্ত ঘাম, গরমে ফুসকুড়ি, রোদে পোড়া এবং ফুসকুড়ি সাধারণ হয়ে ওঠে।
মানসিক স্বাস্থ্যের উপর তাপের প্রভাব
- বিরক্তি এবং রাগ: গরম মানসিক চাপ বাড়ায় এবং মেজাজের পরিবর্তন সাধারণ হয়ে ওঠে।
- একাগ্রতার অভাব: প্রচণ্ড তাপ মনকে ক্লান্ত করে তোলে, যার ফলে পড়াশোনা বা কাজে মনোনিবেশ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
- ঘুমের সমস্যা: ঘাম এবং অস্থিরতার কারণে অপর্যাপ্ত ঘুম হয়, যা মানসিক ক্লান্তির দিকে পরিচালিত করে।
গ্রীষ্মে সংক্রমণের বিস্তার কীভাবে বৃদ্ধি পায়
গরম আবহাওয়ায় জল এবং খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। দূষিত জল এবং খোলা খাবারের কারণে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, কলেরার মতো রোগ ছড়িয়ে পড়ে। শিশু এবং বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে, যার কারণে তারা সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। যারা ইতিমধ্যেই মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা বা উদ্বেগে ভুগছেন, তাদের জন্য তাপ ওই লক্ষণগুলিকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
শরীর ও মনকে গরম থেকে মুক্তি দেওয়ার সহজ উপায়
এই সময় প্রচুর জল পান করুন, লেবু জল, নারকেল জল, বাটার মিল্কের মতো পানীয় শরীর ও মনকে ঠান্ডা রাখে। এই ঋতুতে তাজা ফল, সবুজ শাকসবজি এবং সালাদ শক্তি জোগায়। গরম আবহাওয়ায় বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে দুপুর ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে, দিনের বেলা বিশ্রাম নিন এবং পর্যাপ্ত ঘুমান। সময় পেলে ধ্যান, প্রাণায়াম এবং ধ্যান করুন, এতে মন শান্ত এবং স্থিতিশীল থাকে। বাড়িতে ঠান্ডা পরিবেশ বজায় রাখুন, জানালা বন্ধ রাখুন, পর্দা লাগান, ফ্যান-কুলার ব্যবহার করুন। শিশু এবং বয়স্কদের বিশেষ যত্ন নিন, তাদের ঘন ঘন জল খাওয়ার কথা বলুন।