ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি চলতি যুদ্ধের সময় ইজরায়লের পক্ষ থেকে হত্যার হুমকির মধ্যে একটি বাঙ্কারে আশ্রয় নেওয়ার সময় সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে তিনজন আলেমের নাম ঘোষণা করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
ইরানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিন কর্মকর্তার কথা উল্লেখ করে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ইজরায়েলি হামলায় নিহত শীর্ষ সামরিক কমান্ডারদের স্থলাভিষিক্ত করা শুরু করেছেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। মজার ব্যাপার হলো, আগের প্রতিবেদনের একেবারে উলটো পথে, কর্মকর্তারা বলেছেন যে আলি খামেনির ছেলে মোজতাবা তার উত্তরসূরি হওয়ার জন্য বাছাই করা আলেমদের মধ্যে নেই ।
যদিও এর আগে দাবি করা হয়েছিল যে ছেলেকে এই ভূমিকার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮৬ বছর বয়সি খামেনি ইজরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্র তাকে হত্যার চেষ্টা করতে পারে এমন সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। এই হুমকির আলোকে খামেনি বিরল পদক্ষেপ নিয়েছেন বিশেষজ্ঞ পরিষদকে – ইরানের পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত যাজক সংস্থা – দ্রুত পদক্ষেপ নিতে এবং তিনি ব্যক্তিগতভাবে যে তিনটি নাম সামনে রেখেছেন তার মধ্যে থেকে একজন উত্তরসূরি বেছে নিতে। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে, নতুন সর্বোচ্চ নেতা নিয়োগের প্রক্রিয়াটি কয়েক মাস সময় নিতে পারে, যার মধ্যে তীব্র আলোচনা এবং একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারেন।
তবে দেশটি এখন যুদ্ধে জর্জরিত, কর্মকর্তারা নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন যে খামেনি ইসলামিক প্রজাতন্ত্র এবং তার উত্তরাধিকার উভয়কেই রক্ষার জন্য দ্রুত ও নিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করতে চান। ইরানের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ ও জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভালি নাসরকে উদ্ধৃত করে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে রাষ্ট্রের সংরক্ষণ। নাসর আরও বলেন, 'পুরোটাই ক্যালকুলেটিভ এবং প্র্যাগম্যাটিক। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইজরায়েলের সামরিক লক্ষ্য ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ধ্বংস করাই রয়ে গেছে, তবে আমরা সরকার পরিবর্তনে সহায়তা করার জন্য 'পরিস্থিতি তৈরি করতে পারি'। এর অর্থ ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে টার্গেট করা কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, 'কেউই মুক্ত নয়'।
ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধের দ্বিতীয় সপ্তাহ শুরু হয় ইস্পাহানের কাছে একটি ইরানি পারমাণবিক গবেষণা স্থাপনা লক্ষ্য করে নতুন করে হামলা চালানোর মধ্য দিয়ে। শুক্রবার জেনেভায় ইউরোপীয় বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে ইরানের শীর্ষ কূটনীতিকের আলোচনা ব্যর্থ হয়। ইরানের পরমাণু চুল্লিতে সম্ভাব্য হামলা নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেশের সামরিক সম্পৃক্ততার বিষয়টি বিবেচনা অব্যাহত রেখেছেন। তবে ইউরোপীয় কর্মকর্তারা ভবিষ্যতে আলোচনার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, তিনি আরও সংলাপের জন্য উন্মুক্ত, তবে জোর দিয়ে বলেন যে ইজরায়েল আক্রমণ অব্যাহত রাখলে তেহরান আলোচনায় আগ্রহী নয়। (এজেন্সি থেকে ইনপুট সহ)