এয়ার ইন্ডিয়ার একের পর এক বিমানে নিরাপত্তাজনিত ত্রুটির জেরে যাত্রীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। মানুষ আর বিশ্বাস করতে পারছে না বিমানপথকে। এই আবহে নিরাপত্তা সংক্রান্ত গাফিলতির অভিযোগে এয়ার ইন্ডিয়ার ৩ জন কর্মীকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিল ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিআই)। আমদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় ২৭০ জন নিহত হওয়ার ন'দিন পরে এই পদক্ষেপ করা হল।
আরও পড়ুন-ফের খবরে এয়ার ইন্ডিয়া! মাঝ আকাশে বিমানের ভিতর কাঁপল দরজা! অভিযোগ ক্ষুব্ধ যাত্রীদের
গত ১২ জুন লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার আমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওড়ার কয়েক সেকেন্ড পরেই মেঘানিনগর এলাকায় বিজে মেডিকেল কলেজের একটি হস্টেলের ওপর ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় দুই পাইলট, কেবিন ক্রু এবং যাত্রী মিলিয়ে মোট ২৪১ জনের মৃত্যু হয়। তারপরেই বিমানের নিরাপত্তা সংক্রান্ত গাফিলতির বিরুদ্ধে তৎপর হয় কেন্দ্র। যে তিনজন শীর্ষকর্তাকে বরখাস্ত তাঁদের বিরুদ্ধে মূলত নিরাপত্তায় গাফিলতি করার অভিযোগ উঠেছে। ডিজিসিএ জানিয়েছে, 'ক্রু শিডিউলিং, নিয়ম পর্যবেক্ষণ এবং অভ্যন্তরীণ জবাবদিহির ইস্যুতে মারাত্মক গাফিলতি রয়েছে। সবথেকে উদ্বেগের বিষয় হল, এই গুরুতর ভুলের জন্য প্রত্যক্ষভাবে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তেমন কোনও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি এতদিনে।
ডিজিসিএ আরও জানিয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা হলেন - চূড়া সিং (ডিভিশনাল ভাইস প্রেসিডেন্ট), পিংকি মিত্তল (চিফ ম্যানেজার, অপারেশনস-ক্রু শিডিউলিং), এবং পায়েল অরোরা (ক্রু প্ল্যানিং)।ডিজিসিএ নির্দেশ দিয়েছে, অবিলম্বে ওই তিনজনকে সমস্ত ক্রু শিডিউলিং ও রোস্টার সংক্রান্ত দায়িত্ব থেকে অপসারণ করতে হবে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বিভাগীয় তদন্ত শুরু করতে বলা হয়েছে এবং ১০ দিনের মধ্যে সেই তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এছাড়াও বলা হয়েছে, ওই আধিকারিকদের আপাতত কোনও অপারেশনাল বা বিমানের নিরাপত্তা সংক্রান্ত দায়িত্ব দেওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন-ফের খবরে এয়ার ইন্ডিয়া! মাঝ আকাশে বিমানের ভিতর কাঁপল দরজা! অভিযোগ ক্ষুব্ধ যাত্রীদের
উল্লেখ্য, বিমান দুর্ঘটনায় শুধু যাত্রীরা নন, নিহত ও আহত হন বহু ডাক্তারি পড়ুয়া। আশপাশের ঝুপড়ি, বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অধিকাংশ মৃতদেহই এমনভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাই সরকার নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য ডিএনএ ম্যাচিং করেছে।
গুজরাটের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুশিকেশ প্যাটেল বলেন, 'এখনও পর্যন্, ২২০টি ডিএনএ নমুনা ম্যাচ করা হয়েছে এবং তাঁদের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ২০২ জনের মৃতদেহ ইতিমধ্যেই আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্যান্য নিহতদের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া চলছে।'
বিমান দুর্ঘটনায় কেবল বিমানটিই নয়, বহু মানুষের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। কেউ হারিয়েছেন সন্তানকে, কেউ মা বা বাবাকে, কেউ ভাই, বোন, স্ত্রীকে।