স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় অনেকেই আক্রান্ত হন। মনোবিদ্যার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এই রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা আরও বেড়েছে। কিন্তু হালের এক গবেষণা বলছে, এটি শুধুমাত্র হরমোন এবং স্নায়ুর সমস্যার কারণে তৈরি হওয়া মানসিক সমস্যাই নয়, এর আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে আর বহু বিরল অসুখের সূত্র।
সম্প্রতি আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরভিং মেডিক্যাল সেন্টারের গবেষকরা সমীক্ষার জন্য এমন কয়েক জনকে বেছে নিয়েছিলেন, যাঁরা ব্যাপক ভাবে স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। সমীক্ষায় কী ধরা পড়েছে?
সাধারণত দেখা যায় প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১ জনই স্বল্পবিস্তর এই অসুখে আক্রান্ত হন। তাঁদের অনেকের সমস্যাই চট করে ধরা পড়ে না। অনেকের ক্ষেত্রে লক্ষণ বোঝা যায় না। তাঁদের নিয়ে গবেষকরা বিশেষ আলোচনাও করেননি। তাঁদের মূল আলোচনা সেই সব আক্রান্তদের নিয়ে, যাঁদের মধ্যে অসুখের লক্ষণ ব্যাপক ভাবে রয়েছে।
যে কোনও জনগোষ্ঠীর মাত্র ১ শতাংশ স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হলেও দেখা গিয়েছে, এই অসুখটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জিনগত। অর্থাৎ আগের প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্মে অসুখটি চলে আসে। স্কিৎজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত মানুষের প্রায় ৮০ শতাংশের ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, তাঁদের বাবা বা মা একই সমস্যায় আক্রান্ত। সেখান থেকেই বিজ্ঞানীদের মত, এই রোগের সঙ্গে জিনের গভীর যোগাযোগ রয়েছে। তারই সন্ধান করতে গিয়ে ধরা পড়েছে নতুন কিছু দিক।
সাম্প্রতিক গবেষণাটি বলছে, যাঁদের মধ্যে স্কিৎজোফ্রেনিয়ার মাত্রা অনেকটাই বেশি, তাঁদের জিনে রয়েছে বেশ কিছু জটিল এবং বিরল অসুখের সূত্র। এই অসুখগুলির ধারক ও বাহক তাঁরা। যদিও আপাত ভাবে এই অসুখগুলির লক্ষণ তাঁদের মধ্যে প্রকট ভাবে দেখা যায় না। কিন্তু তাঁদের মারফত এই অসুখগুলি অন্যদের মধ্যে সঞ্চারিত হতে পারে। তার মধ্যে যেমন রয়েছে জিনঘটিত বিরল কিছু অসুখ, তেমনই রয়েছে নানা ধরনের সংক্রামক অসুখও।
আগামী দিনে এই বিষয় নিয়ে আরও গবেষণা হলে, জিনঘটিত অসুখ সম্পর্কে বহু অজানা তথ্য জানা যাবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। খুলে যেতে পারে চিকিৎসার নানা দরজাও। এমনই আশা তাঁদের।