ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে আরও অনেক সমস্যা ধেয়ে আসতে পারে। এর মধ্যে একটি সাধারণ লক্ষণ হল ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া। এই সমস্যাটি কেবল অস্বস্তিই সৃষ্টি করে না, বরং শরীর থেকে প্রয়োজনীয় তরল এবং ইলেক্ট্রোলাইটের ক্ষয়ও ঘটাতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, যখন শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি হয়ে যায়, তখন কিডনি তা ফিল্টার করার জন্য আরও বেশি পরিশ্রম করে। এই অতিরিক্ত চিনি প্রস্রাবের মাধ্যমে নির্গত হয় এবং এর সঙ্গে সঙ্গে শরীর থেকে অতিরিক্ত জলও নির্গত হয়, যার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়।
ডায়াবিটিস রোগীরা কেন ঘন ঘন প্রস্রাব করেন
ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীরা যদি তাদের দৈনন্দিন রুটিন এবং খাদ্যাভ্যাসে একটু যত্ন নেন, তাহলে এই লক্ষণটি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
ঘন ঘন প্রস্রাবের মূল কারণ হল ভারসাম্যহীন শর্করার মাত্রা। অতএব, নিয়মিত আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করুন এবং সময়মতো আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খান। সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়াম গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে এবং প্রস্রাবের সমস্যা কমাতে পারে।
রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব করলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ঘুমাতে যাওয়ার এক বা দুই ঘণ্টা আগে জল পান কমানোর চেষ্টা করুন। শরীরকে হাইড্রেটেড রাখার জন্য সারাদিন পর্যাপ্ত জল পান করুন, তবে রাতে জলের পরিমাণ সীমিত করুন।
চা, কফি এবং চিনিযুক্ত পানীয় হল মূত্রবর্ধক, যা ঘন ঘন প্রস্রাবের কারণ হয়। ডায়াবেটিস রোগীদের তাদের ব্যবহার সীমিত করা উচিত। এগুলোর পরিবর্তে, নারকেল জল, বাটারমিল্ক বা লেবু জলের মতো প্রাকৃতিক পানীয়গুলি আরও ভাল বিকল্প।
ফাইবার হজমে সাহায্য করে এবং চিনির মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। ওটস, ব্রাউন রাইস, শাকসবজি এবং ফলের মতো খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে চিনির প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, যা ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যাও কমায়।
মানসিক চাপ হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে যা রক্তে শর্করার মাত্রাকে প্রভাবিত করে। যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের মাধ্যমে মানসিক চাপ কমিয়ে আনুন। এটি কেবল ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে না বরং ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যাও কমায়।
ডায়াবিটিসে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা কিন্তু উপেক্ষা করা উচিত নয়। যদি সময়মতো এটি বোঝা যায় এবং নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলে জীবনের মান উন্নত করা যায়। ডাক্তারের পরামর্শ এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন একসঙ্গে এই সমস্যাটি অনেকাংশে দূর করতে পারে।